কঠিন এক সমীকরণ সামনে রেখে বিশ্বকাপ ক্রিকেটে নিজেদের পঞ্চম ম্যাচে আজ মাঠে নামছে বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষের নাম দক্ষিণ আফ্রিকা। তাদেরও পঞ্চম ম্যাচ এটি। বাংলাদেশ সময় দুপুর আড়াইটায় ওয়াংখের স্টেডিয়ামে শুরু হবে ম্যাচটি।

মাঠের লড়াইয়ে নামার আগে দুই দলের মধ্যে দুটো মিল রয়েছে। উভয় দল এর আগে চারটা ম্যাচ খেলেছে। উভয়ের বিশ্বকাপ মিশন জয়ে শুরু। তারপর শুধু অমিল, তাদের চলার পথ আর সমান্তরাল থাকেনি। পয়েন্ট টেবিলে তড়তড় করে উপরে উঠেছে প্রোটিয়ারা, আর টাইগাররা দৌড়েছে নিচের দিকে। চার ম্যাচ থেকে ৬ পয়েন্ট নিয়ে প্রোটিয়ার এখন তৃতীয় স্থানে। আর বাংলাদেশ সপ্তম স্থানে।

আজ জয় পেলে প্রোটিয়ারা সেমিফাইনালে খেলার সম্ভাবনা অনেকটা উজ্জ্বল করে তুলবে। ঠিক বিপরীত অবস্থান বাংলাদেশের। দক্ষিণ আফ্রিকার জয় মানে বাংলাদেশের হার। এমন হলে আজই টাইগারদের সেমিফাইনাল স্বপ্নের ইতি হবে।

আজকের ম্যাচের পর বিশ্বকাপে বাংলাদেশের আরো চারটি ম্যাচ বাকি থাকবে। এই ম্যাচগুলো নিয়ম রক্ষার হবে কিনা তা আজকের লড়াইয়ের ওপর নির্ভর করছে। জয় বাংলাদেশের পরবর্তী ম্যাচগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলবে। এমন ম্যাচের আগে দলে ফিরছেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। গতকাল অনুশীলন করেছেন এ অলরাউন্ডার। ইনজুরির কারণে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে ছিলেন না তিনি। তবে এ ম্যাচেও তাসকিনের খেলার সম্ভাবনা নাই।

সাকিবের ফেরায় দলের ব্যাটিং ও বোলিং উভয় বিভাগে বাংলাদেশের শক্তি বাড়বে। বিশ্বকাপে অবশ্য বাংলাদেশের ব্যাটিংটা দু্যতি ছড়াতে পারছে না। অনেক পুঁচকে দলের দলীয় রান বাংলাদেশকেও ছাড়িয়ে গেছে। বিশেষ করে ওপেনিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থা বেশ নাজুক। এমন পরিস্থিতিতে ক্যারিয়ারের শেষ দিকে থাকা মুশফিকুর রহিমকে ব্যাট হতে নেতৃত্ব দিতে হচ্ছে। তার ব্যাট থেকেই এসেছে সবচেয়ে বেশি রান। আর এক বর্ষীয়ান খেলোয়াড় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ তার ব্যাটিং দক্ষতায় বাংলাদেশকে লজ্জা থেকে রক্ষা করে চলেছেন।

চলমান বিশ্বকাপে প্রোটিয়াদের পারফরম্যান্স প্রতিপক্ষের বুকে কাঁপন ধরানোর জন্য যথেষ্ঠ। ব্যাট করাটা যেনো পৃথিবীর সহজতম কাজ- দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটাররা সেটাই প্রমাণ করে চলেছেন। জয় পাওয়া প্রতিটা ম্যাচেই রান পাহাড় গড়েছে তারা। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয় ১০২ রানে, অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছে ১৩৪ রানে, আর ইংল্যান্ডকে ২২৯ রানে।

প্রথমে ব্যাট করে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রত্যেক ম্যাচে তিন শতাধিক রান করেছে। একটা ম্যাচে তারা পরে ব্যাট করেছে, ওই একটা ম্যাচেই দলটি হেরেছে। দলটির বোলিং ডিপার্টমেন্ট কতটা শক্তিশালী প্রতিপক্ষ ভালোভাবেই টের পেয়েছে। কাগিসো রাবাদা, লুঙ্গি এনগিদি, মার্কো ইয়ানসেনরা যথেষ্ঠ ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেন। তাদের বোলিং লাইন মাত্র একবারই ব্যর্থ হয়েছে।

আজকের ম্যাচে আগে অনেক কিছুই বাংলাদেশকে আশাবাদী হতে দিচ্ছে না। তবে আশাহত না হওয়ারও অনেক কারণ আছে। বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের রেকর্ডটা যথেষ্ঠ ঈর্ষণীয়। ক্রিকেটের সর্বোচ্চ আসরে দুই মুখোমুখি লড়াইয়ে জয় বাংলাদেশের। গতবছর ওয়ানডে সিরিজে জয়ের কীর্তি তো রয়েছেই। এছাড়া বিশ্বকাপের অঘটন! আফগানিস্তান আর নেদারল্যান্ডস এরই মধ্যে অঘটনের জম্ম দিয়েছে। বাংলাদেশ এখনো পারেনি। আজ কি তাহলে সেই দিন- বাংলাদেশ দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে অঘটনের জম্ম দেবে।