চেন্নাই সুপার কিংসের করা ২২১ রানের জবাবে মাত্র ৩১ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। সেখান থেকে অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনে ২০২ রান করে ফেলে কলকাতা, ম্যাচ হারে মাত্র ১৮ রানে। এর পেছনে মূল অবদান দুই পেস বোলিং অলরাউন্ডার আন্দ্রে রাসেল ও প্যাট কামিনসের।

শুরুটা করেছিলেন রাসেল। পাওয়ার প্লে’র মধ্যেই ৫ উইকেট পতনের পর পাল্টা আক্রমণ শুরু করেন তিনি। দীনেশ কার্তিককে নিয়ে ষষ্ঠ উইকেটে গড়েন ৩৬ বলে ৮১ রানের জুটি। তবে নিজের কাজ পুরোটা শেষ করতে পারেননি। আউট হয়ে যান ইনিংসের ১২তম ওভারে।

সাজঘরে ফেরার আগে ৩ চার ও ৬ ছয়ের মারে ২২ বলে ৫৪ রান করেন রাসেল। চেন্নাইয়ের বোলার-ফিল্ডারদের মনে কাঁপন ধরাতে সক্ষম হন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আউট হন দৃষ্টিকটুভাবে। তখনও জয়ের জন্য ৫২ বলে ১১০ রান প্রয়োজন ছিল কলকাতার।

ইনিংসের ১২তম নিজের তুরুপের তাসটা খেলেন চেন্নাই অধিনায়ক ধোনি। সবাই যখন অপেক্ষায় ছিলেন আরেক স্পিনার মঈন আলির আক্রমণে আসার, তখন ধোনি বল তুলে দেন বাঁহাতি পেসার স্যাম কারানের হাতে। এমনভাবে ফিল্ড সাজান, যেন ওয়াইড ইয়র্কার করবেন কারান।

কিন্তু বিধিবাম! রাসেলকে ধোঁকায় ফেলে লেগস্ট্যাম্পের ওপর লেন্থ ডেলিভারি করেন কারান। ওয়াইড হবে ভেবে ছেড়ে দেন রাসেল। বল সোজা গিয়ে আঘাত হানে লেগস্ট্যাম্পে, বাজে রাসেলের ৩ চার ও ৬ ছয়ের মারে খেলা ২২ বলে ৫৪ রানের ইনিংসের বিদায় ঘণ্টা।

এমনভাবে আউট হওয়ার পর লম্বাসময় আর ড্রেসিংরুমে ফেরেননি রাসেল। অন্তত চার ওভার পর্যন্ত তাকে চিপকের প্যাভিলিয়নের সিঁড়িতেই বসে থাকতে দেখা যায়। যা রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। সেদিন জানা যায়নি, সিঁড়িতে বসে থাকার কারণ।

আজ কলকাতার আরেক ম্যাচের আগে সেদিনের ঐ ঘটনা নিয়ে কথা বলেছেন রাসেল। মূলত দলের সতীর্থ সাকিব আল হাসান, ইয়ন মরগ্যান, সুনিল নারিনদের মুখোমুখি হওয়ার সাহস ছিল না বলেই দীর্ঘসময় সিঁড়িতে বসে ছিলেন রাসেল। সেখানে বসেই দেখেছিলেন পরবর্তীতে তোলা প্যাট কামিনসের ঝড়।

কলকাতার ওয়েবসাইটে দেখা সাক্ষাৎকারে রাসেল বলেছেন, ‘আসলে আমি একটু আবেগপ্রবণ হয়ে গিয়েছিলাম। আমার মাথায় আসছিল না আমি কীভাবে ড্রেসিংরুমে যাব, সতীর্থদের চোখে চোখে রাখব। বিশেষ করে যেভাবে বল ছেড়ে দিতে গিয়ে বোল্ড হলাম; এরপর আমার আসলেই সাহস ছিল না।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘দেখুন, আমি যখন আউট হলাম, তখনো আমার কাজ শেষ হয়নি। আমি চেয়েছিলাম একদম শেষ পর্যন্ত ক্রিজে থেকে দলকে জিতিয়ে আসতে। যাহোক, শেষমেশ একটু বেশি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলাম। কিন্তু এখন ঠিক আছি।’