বর্ষাকালে জীবাণুর বংশবৃদ্ধি হয় দ্রুত। টানা বৃষ্টি আর স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়ায় নানা রকম ছত্রাক ও জীবাণু আরও সক্রিয় হয়ে ওঠে। এ সময় ত্বক বা ত্বকের খোসপাঁচড়া, ফাঙ্গাল ইনফেকশন, প্যারনাইকিয়া, স্ক্যাবিজ জাতীয় নানা ধরনের ত্বকের অসুখ হয়ে থাকে৷ ভিজে শরীর ভালোভাবে না মুছলে, ভিজে কাপড় ভালোভাবে না শুকিয়ে গায়ে দিলে, রোদ না থাকায় স্যাঁতস্যাঁতে ঘর—ইত্যাদি কারণে বর্ষাকালে ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।

ত্বকের সংক্রমণ

ছত্রাকের আক্রমণকেই বর্ষাকালের প্রধান রোগ বা বর্ষাজনিত রোগ বলে। লাগাতার বৃষ্টির কারণে প্রায়ই রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে থাকে। রাস্তার এসব ময়লা পানি ত্বকে লাগলে মারাত্মক সংক্রমণ হতে পারে। আর এই পানি লাগলে দ্রুত তা পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে ও শরীর ভালোভাবে মুছে নিতে হবে। যারা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে ততটা সচেতন নয়, তাদেরই এই রোগগুলো বেশি হতে দেখা যায়।

সেসব সংক্রমণ বেশি হয়

বর্ষাকালে মূলত তিন ধরনের ছত্রাক রোগ দেখা যায়। সেগুলো হলো—

১. দাদ

২.ছুলি ও

৩.ক্যানডিডিয়াসিস

দাদ

এই তিন ধরনের ছত্রাক প্রজাতির সবই মূলত ত্বকের বাইরের অংশকে আক্রমণ করে। স্যাঁতসেতে, নোংরা, ঘর্মাক্ত দেহে সবচেয়ে বেশি হতে দেখা যায় ছত্রাকের সংক্রমণ। এর মধ্যে অন্যতম হলো দাদ। এটি  শরীরের যেকোনো স্থানে দেখা দিতে পারে। তবে সাধারণত তলপেট, পেট, কোমর, পিঠ, মাথা, ইত্যাদি স্থানে বেশি হয়।

ছুলি

ছুলিও একটি ছত্রাকজনিত রোগ। বর্ষা ও গ্রীষ্মে এ রোগ বেশি হয়। শীতকালে আবার এমনিতেই মিলিয়ে যায়। ছুলি দেখতে হালকা বাদামি, সাদা গোলাকৃতির মতো দেখা যায়। বুকে, গলার দুপাশে ঘাড়ের পেছনে, পিঠে, বগলের নিচে, এমনকি সারা শরীরে হতে পারে। অনেক সময় এতে ত্বক দেখতে সাদা হয়। তাই অনেকেই আবার একে শ্বেতী ভাবতেও শুরু করেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে শ্বেতীর সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই।

ক্যানডিডিয়াসিস

ক্যানডিডিয়াসিসও একটি ছত্রাকজনিত চর্মরোগ। যাদের শরীরে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, যেমন শিশু-বৃদ্ধ কিংবা রোগাক্রান্ত ব্যাক্তি যেমন: ডায়াবেটিস আক্রান্ত দীর্ঘদিন ধরে, যারা স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করেছে কিংবা যাদের ত্বকের ভাঁজ পানিতে অথবা ঘামে সব সময় ভেজা থাকে তাদেরই এই রোগটি বেশি হয়।

যারা সব সময় পানি নাড়াচড়া করে, তাদের আঙুলের ফাঁকে, হাতের ভাঁজে, শিশুদের জিহ্বা, মহিলাদের যোনিপথে এবং গর্ভবতী নারীরা এতে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন। এতে ত্বকের আক্রান্ত স্থান একটু লালচে ধরনের দেখা যায় এবং সঙ্গে প্রচর চুলকানি হয়ে থাকে।