শীতে গাজর খাওয়ার স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেক। শীতকালীন সবজি হিসেবে গাজর সহজলভ্য। কাঁচা এমনকি রান্না করেও সবজিটি খাওয়া যায়। হাজারো পুষ্টিগুণে ভরপুর গাজরে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন, ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস, ক্যালসিয়ামসহ প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজ পদার্থ।

এসব পুষ্টিকর উপাদান ওজন কমানো, হজমের সমস্যা সমাধান, চোখ ও ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নত করে। গাজর বিটা ক্যারোটিন সমৃদ্ধ। জানেন কি? বিটা ক্যারোটিন দেহে ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়। যা শরীরের খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমায়। ফলে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে।

jagonews24

ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের মতে, রক্তে থাকা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস করে গাজর। এটি এথেরোস্ক্লেরোসিসের (একটি ব্যাধি) বিকাশ রোধেও সহায়তা করতে পারে। এথেরোস্ক্লেরোসিস কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ তখনই হয়; যখন আমাদের ধমনীতে ফ্যাট এবং কোলেস্টেরল জমা হয়।

গাজর হৃদরোগ সারাতে কতটা কার্যকরী সে বিষয়ের ওপর দুটি গবেষণা পরিচালিত হয়েছে। একটি মানুষের ওপর এবং অন্যটি ইঁদুরের ওপর। মানুষের ওপর হওয়া সমীক্ষায় গবেষকরা ৭৬৭ জনের (১৮-২৫ বছর) রক্ত ও ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেন।

jagonews24

গবেষকরা পরীক্ষা করে দেখেন, বিটা ক্যারোটিন কীভাবে ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়। তারা লক্ষ্য করেন, এক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করে একটি এনজাইম (এক প্রকার জৈব অনুঘটক; গঠনগতভাবে এটি প্রোটিন জাতীয় পদার্থ)। যার নাম বিটা ক্যারোটিন অক্সিজেনাস-১ (বিসিও১)। এরসঙ্গে যুক্ত থাকে শরীরের কোলেস্টেরল স্তর। যাদের এনজাইম উৎপাদনের হার কম; তাদের শরীরে ভিটামিন এ’র পরিমাণও কম। অন্যদিকে বাড়তে থাকে কোলেস্টেরল। যা নানা রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

ইঁদুরের ওপর করা গবেষণা থেকে একই বিষয় লক্ষ্য করেছেন। এ বিষয়ে ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্য বিজ্ঞান এবং মানব পুষ্টি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জৌমে আমেঙ্গুয়াল ব্যাখ্যা করেছেন, ইঁদুরের শরীরে যখন বিটা ক্যারোটিন দেওয়া হয়; তখন দেখা যায় তাদের কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমছে।

jagonews24

যা হৃদরোগের বিকাশ ঘটতে দেয় না। এর অর্থ হলো- বিটা ক্যারোটিন যারা নিয়মিতভাবে গ্রহণ করেন না, তাদের হার্টের চেয়ে যারা নিয়মিত গ্রহণ করেন, তাদের হার্টের অবস্থা অনেকটাই ভালো। গবেষণাটি ‘লিপিড রিসার্চ’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।

jagonews24

এবার জেনে নিন যেসব উপায়ে গাজর খেলে সবটুকু পুষ্টি উপাদান পাবেন-

কমলা ও গাজরের ডিটক্স পানীয়: কমলা ও গাজর একসঙ্গে ব্লেন্ড করে পানীয়টি তৈরি করতে হবে। এ পানীয় সকালে খালি পেটে পান করলে শরীরের সব ক্ষতিকর পদার্থ বের হয়ে যাবে।

গাজর-আদা স্যুপ: আদার পুষ্টিগুণ সম্পর্কে অনেকেরই জানা আছে। ইমিউনিটি সিস্টেমকে উন্নত রাখতে আদার বিকল্প নেই। বিভিন্ন সংক্রমণ রোগের দাওয়াই হলো আদা। গাজর ও আদার স্যুপ স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিতে ভরপুর। স্যুপটি আপনাকে শীতে গরম রাখতেও সাহায্য করবে।