করোনাভাইরাস আতঙ্ক যে কয়েকটি ক্ষেত্রে বেশি ভয় ধরিয়েছে মানুষের মনে, তার মধ্যে অন্যতম হল চিকিৎসাক্ষেত্র। বিশেষত চোখ বা দাঁতের চিকিৎসা। আপনার হাই-পাওয়ার রয়েছে? কোনও কারণে চশমা ভেঙে গিয়েছে বা পাওয়ার ওঠা-নামা করছে কিংবা চোখের সংক্রমণে ভুগছেন?

তবুও চোখের চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের চেম্বারে যাওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন। একইভাবে যারা কনট্যাক্ট লেন্স ব্যবহার করেন, তাদের ক্ষেত্রে লেন্স পাল্টানো, নতুন লেন্স নেওয়া, সলিউশন চেঞ্জ করা কিংবা লেন্স থেকে সংক্রমণের আশঙ্কা- সবক’টি ক্ষেত্রেই সাবধানতা অবলম্বন জরুরি।

অনেকেই লেন্স ব্যবহার করেন শুধুমাত্র দেখতে ভাল লাগবে বলে। লেন্স কর্নিয়ার উপরে আঁশের মতো লেগে থাকায় তা নড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কম, তাই এতে চোখের মণি যেমন পরিষ্কার থাকে, তেমনই শার্পনেসও বাড়ে। কেউ পেশার প্রয়োজনে, কেউ আবার পাওয়ার স্টেডি রাখবেন বলেও কনট্যাক্ট লেন্সের শরণাপন্ন হন। সেক্ষেত্রে প্রশ্ন আসে, কোন বয়স থেকে ব্যবহার করা যেতে পারে কনট্যাক্ট লেন্স?

ভারতের বিখ্যাত চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. সুমিত চৌধুরী বলছেন, যে বয়স থেকে শিশুরা নিজের কাজ নিজেরা করতে পারে, তখন থেকে ব্যবহার করতে পারে লেন্সও। কারণ লেন্সের খোলা-পরা ও রাখার ক্ষেত্রে যে যত্ন ও সাবধানতা প্রয়োজন হয়, তা আপনার সন্তানকে শিখিয়ে দিলে সে নিজেই পারবে।

লেন্স ব্যবহার এখন কতটা নিরাপদ?

লেন্স পরার আগে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নটি হল, এখন এর ব্যবহার কতটা নিরাপদ? সংক্রমণের ভয়ই বা কতটা? ডা. সুমিত চৌধুরীর মতে, একান্ত প্রয়োজন না হলে এ সময়ে লেন্সের ব্যবহার এড়িয়ে চশমা দিয়ে কাজ চালানোই ভাল। যদি অ্যাপের মাধ্যমে আই-চেকআপে পাওয়ার নির্ধারণ করা হয়, তা সব সময়ে নির্ভুল না-ও হতে পারে।

দ্বিতীয়ত- স্যানিটাইজেশন বা পরিষ্কার হাতে লেন্স ব্যবহার করায় কোনও ত্রুটি থেকে গেলেও সংক্রমণ হতে পারে। এই সময়ে কোনও রোগী রেড-আই বা কনজাংটিভাইটিস নিয়ে এলেও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে চিকিৎসকরা প্রথমেই দেখে নিচ্ছেন তাঁর দেহে কোভিড-১৯ এর কোনও রকম লক্ষণ আছে কিনা? জানালেন ডা. সুমিত।

লেন্স ব্যবহারের কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও আছে, যেমন- দীর্ঘ ব্যবহারের ফলে চোখ শুষ্ক হয়ে যাওয়া বা চোখে জ্বালা, র‌্যাশ বের হওয়া। তাই যেসব লেন্সে জলীয় ভাগ বেশি, তেমন লেন্স ব্যবহার করতে হবে।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ- লেন্স নিলে একটু দামি ও ভাল মানের লেন্স ব্যবহার করাই ভাল। কারণ চোখের সঙ্গে আপস চলে না।