মাত্র ৩০ হাজার টাকা খরচ করলেই মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা হতে পারছে বাংলাদেশের নাগরিক! টাকার বিনিময়ে তৈরি করতে পারছে ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র ও জন্মনিবন্ধন সনদ। অভিযোগ আছে, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের কম্পিউটার অপারেটররাই এসব অপরাধে জড়িত। কাজটি নির্বিঘ্নে করতে তারা গড়ে তুলেছেন চক্র। এমন চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগ।

গ্রেপ্তাররা হলেন দিনাজপুরের বিরল পৌরসভার কম্পিউটার অপারেটর মো. আব্দুর রশিদ, বিরলের রানীপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের কম্পিউটার অপারেটর সোহেল চন্দ্র, তাদের সহযোগী মো. শহিদুল ইসলাম মুন্না, মো. রাসেল খান ও মো. মোস্তাফিজুর রহমান।

গতকাল সোমবার বিকেলে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দাপ্রধান অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ।

হারুন অর রশীদ বলেন, রশিদ ও সোহেল পৌর মেয়র, ইউপি চেয়ারম্যান ও সচিবের আইডি ব্যবহার করে এনআইডি ও জন্মনিবন্ধন সার্ভারে প্রবেশ করে এসব অপকর্ম করত। বাকি তিনজন মাঠ পর্যায়ে গ্রাহক আনার কাজ করত। চক্রটি এনআইডি ও জন্মনিবন্ধন সনদ তৈরির কথা বলে অনলাইনে বিজ্ঞাপন দিয়ে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করত। তারা রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি বাংলাদেশি নাগরিকদেরও ভুয়া জন্মনিবন্ধন সনদ তৈরি করে দিত। নিয়মিত সাইবার টহলে বিষয়টি নজরে এলে অনুসন্ধানে নামে সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইমের কর্মকর্তারা। একপর্যায়ে চক্রটির সন্ধান পাওয়া যায়।

তিনি বলেন, মূলহোতা মো. আব্দুর রশিদ দিনাজপুরের বিরল পৌরসভায় এবং সোহেল চন্দ্র বিরলের ১০ নম্বর রাণীপুকুর ইউনিয়ন পরিষদে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কর্মরত। বাকিদের সহায়তায় তারা দুজন টেকনাফে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের বিরলের অধিবাসী দেখিয়ে জন্মনিবন্ধন সনদ বানিয়ে দিত। কাজের ধরন অনুযায়ী টাকা পেত তারা। এ ছাড়া কুষ্টিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশের অনেক পৌরসভা ও ইউনিয়নে তাদের লোক আছে। যারা ৫ থেকে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে হাজার হাজার ভুয়া জন্মনিবন্ধন করে দিয়েছে। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।