মহামারী করোনা ভাইরাস এর কারণে বিভিন্ন দেশে অনুষ্ঠানসমূহ সীমিত আকারে পালন করা হচ্ছে। ইংরেজি নববর্ষের প্রাক্কালে ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখ রাতে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে নির্ধারিত অনুষ্ঠানসমূহ পালিত হবে। তবে সরকারের নির্দেশনা অনুসারে উন্মুক্ত স্থানে কোন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যাবে না। উৎসব উদযাপনের নামে কিছু উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি নিজস্ব সংস্কৃতি, মূল্যবোধ ঐতিহ্য বিরোধী কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়ে থাকে।

কতিপয় ব্যক্তি আনন্দের আতিশয্যে পটকাবাজি, আতশবাজি, অশোভন আচরণ, বেপরোয়া গাড়ি ও মোটরসাইকেল চালানোর মাধ্যমে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা/দুর্ঘটনা ঘটিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটায়। ক্ষেত্র বিশেষে প্রকাশ্যে অভদ্রজনোচিত আপত্তিকর আচরণ করে থাকে। এ সকল নৈতিক মূল্যবোধ পরিপন্থী কর্মকান্ড একদিকে যেমন সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করে, অন্যদিকে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা সৃষ্টি করে।

এমতাবস্থায় আগামী ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখ রাতে পটকাবাজি, আতশবাজি, বেপরোয়া গাড়ি, মোটরসাইকেল চালনাসহ যে কোন ধরণের অশোভন আচরণ এবং বেআইনী কার্যকলাপ হতে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করা হলো। ইংরেজি নববর্ষ উদযাপনকালে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির যে কোন ধরণের আশঙ্কা রোধকল্পে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ বদ্ধপরিকর। এছাড়াও ঢাকা মহানগরীতে নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে নিন্মোক্ত নির্দেশনাসমূহ মেনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে সহযোগিতা করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ করা হলো।

আজ মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহাঃ শফিকুল ইসলাম বিপিএম (বার) স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নগরবাসীকে এ আহবান জানানো হয়।

১। ঢাকা মহানগরের সার্বিক নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলার স্বার্থে রাস্তার মোড়, ফ্লাইওভার, রাস্তায়, ভবনের ছাদে এবং প্রকাশ্যে স্থানে কোন ধরণের জমায়েত/সমাবেশ/উৎসব করা যাবে না।

২। উন্মুক্ত স্থানে নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে কোন ধরণের অনুষ্ঠান বা সমবেত হওয়া যাবে না বা নাচ, গান ও কোন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা যাবে না।

৩। কোথাও কোন ধরণের আতশবাজি/পটকা ফোটানো যাবে না।

৪। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সন্ধ্যা ৬ টার পরে বহিরাগত কোন ব্যক্তি বা যানবাহন প্রবেশ করতে পারবে না।

৫। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকায় বসবাসরত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের গাড়ি নির্ধারিত সময়ের পর পরিচয় প্রদান সাপেক্ষে শাহবাগ ক্রসিং দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে। তবে পরিচয় প্রদান সাপেক্ষে নীলক্ষেত ক্রসিং দিয়ে পায়ে হেঁটে প্রবেশ করতে পারবে।

৬। গুলশান ও বনানী এলাকায় রাত ৮ টার পর বহিরাগতরা প্রবেশ করতে পারবে না। তবে উক্ত এলাকায় বসবাসরত সম্মানিত নাগরিকবৃন্দ নির্ধারিত সময়ের পর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ (কাকলী ক্রসিং) এবং মহাখালী আমতলী ক্রসিং দিয়ে পরিচয় প্রদান সাপেক্ষে প্রবেশ করতে পারবে।

৭। একইভাবে উপর্যুক্ত সময়ে সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে গুলশান, বনানী, বারিধারা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকায় যে সকল নাগরিক বসবাস করেন না তাদেরকে বর্ণিত এলাকায় গমনের ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করা হলো।

৮। রাত ৮ টার পর হাতিরঝিল এলাকায় কাউকে অবস্থান করতে দেয়া হবে না।

৯। গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকায় বসবাসরত সম্মানিত নাগরিকবৃন্দকে ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখ রাত ৮ টার মধ্যে স্ব-স্ব এলাকায় প্রত্যাবর্তনের জন্য অনুরোধ করা হলো।

১০। ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখ সন্ধ্যা ৬ টার পর ঢাকা মহানগরীর কোন বার খোলা রাখা যাবে না।

১১। রাত ১০ টার পর সকল ফাস্টফুড দোকান বন্ধ থাকবে।

১২। সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে সীমিত আকারে আবাসিক হোটেলগুলোতে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠান করতে পারবে। তবে কোন ক্রমেই ডিজে পার্টি করতে দেয়া যাবে না।

১৩। ইংরেজি নববর্ষের প্রাক্কালে ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখ সন্ধ্যা ৬ টা হতে ০১ জানুয়ারি ২০২১ তারিখ ভোর ০৬.০০ টা পর্যন্ত ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন আবাসিক হোটেল, রেঁস্তোরা, জনসমাবেশ ও উৎসবস্থলে সকল প্রকার লাইসেন্সকৃত আগ্নেয়াস্ত্র বহন না করার জন্য সংশ্লিষ্ট সম্মানিত নগরবাসীর প্রতি অনুরোধ করা হলো। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ উপর্যুক্ত নির্দেশনা পালনে ব্যর্থ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

সূত্র: ডিএমপি নিউজ