নবদেশ ডেস্ক
;
নবদেশ ডেস্ক
আপডেট : শনিবার ২৭শে সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:০৯ পূর্বাহ্ণ
অনলাইন সংস্করণ
ছবি সংগৃহীত
ইরান ও রাশিয়ার মধ্যে নতুন করে চারটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ২৫ বিলিয়ন ডলারের বিশাল চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, হরমোজগানের সিরিক অঞ্চলে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংস্থা রোসাটম।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের বরাত দিয়ে বলা হয়, ইরান হরমোজ কোম্পানি ও রোসাটমের মধ্যে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। প্রতিটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা হবে ১ হাজার ২৫৫ মেগাওয়াট। তবে প্রকল্প সম্পন্ন করতে কত সময় লাগবে সে বিষয়ে কোনও তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
বর্তমানে ইরানে মাত্র একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু রয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলীয় বুশেহরে অবস্থিত কেন্দ্রটির উৎপাদন ক্ষমতা ১ হাজার মেগাওয়াট, যা দেশের মোট জ্বালানি চাহিদার তুলনায় খুবই সামান্য। নতুন চুক্তি বাস্তবায়ন হলে ইরানের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতায় বড় পরিবর্তন আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই চুক্তির খবর এমন এক সময়ে এলো, যখন ইরানের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের কঠোর নিষেধাজ্ঞা ফের কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ইউরোপীয় দেশগুলো—ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি—অভিযোগ করেছে যে, ইরান ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তির অঙ্গীকার রক্ষা করছে না। এর ভিত্তিতেই তারা ‘স্ন্যাপব্যাক’ নিষেধাজ্ঞা চালুর উদ্যোগ নিয়েছে।
শুক্রবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে চীন ও রাশিয়া ছয় মাসের অতিরিক্ত সময় দিয়ে আলোচনার প্রস্তাব করলেও তা গৃহীত হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। পশ্চিমা দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে ইরানকে গোপনে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করার অভিযোগ করে আসছে। তবে তেহরান সব অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, তাদের কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ ও বেসামরিক ব্যবহারের জন্যই সীমাবদ্ধ।
২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র একতরফাভাবে পারমাণবিক চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার পর ইরান ধীরে ধীরে চুক্তির শর্ত মানা থেকে সরে আসে। সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েলের নজিরবিহীন হামলা ও যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি জড়িয়ে পড়ায় নতুন চুক্তির আলোচনাও ভেস্তে যায়।
উল্লেখ্য, ইরান ও রাশিয়ার পারমাণবিক সহযোগিতা নতুন নয়। ১৯৯৩ সালে দুই দেশ প্রথম একটি পারমাণবিক চুক্তি করে, যার ভিত্তিতে জার্মানি হাত গুটিয়ে নেওয়ার পর বুশেহর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করে রাশিয়া।