মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপে সন্তুষ্ট নয় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফ। পাশাপাশি টাকা ছাপিয়ে ব্যাংক বাঁচানোর উদ্যোগে সতর্ক হওয়ার পরামর্শও সংস্থাটির মিশন প্রধানের। আগামী ফেব্রুয়ারিতে আইএমএফ বোর্ড সভায় বাংলাদেশকে দেওয়া ঋণের চতুর্থ কিস্তি ছাড়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলেও জানান ক্রিস পাপাজর্জিও।

আজ বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আইএমএফ প্রতিনিধিদলের প্রধান ক্রিস পাপাজর্জিও এসব কথা বলেন। আইএমএফ প্রতিনিধি দলের ১৬ দিনের সফর শেষে সচিবালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি পরামর্শ রেখে দ্রব্যমূল্য কমাতে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়াসহ কর অব্যাহতি অপসারণ, অপ্রয়োজনীয় ব্যয়ের রাশ টেনে ধরা, মুদ্রা সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ, বিনিময় হার আরও নমনীয় এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ধরে রাখার পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি।

আইএমএফ মিশন প্রধান বলেন, বাংলাদেশে কর রাজস্ব অনুপাত কম। তাই একটি স্বচ্ছ ও ন্যায্য রাজস্ব ব্যবস্থা গড়ে তুলতে জরুরি ভিত্তিতে রাজস্ব সংক্রান্ত সংস্কার করতে হবে।

টাকা ছাপিয়ে ব্যাংক বাঁচানোর পরিকল্পনা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে আইএমএফ মিশন প্রধান জানান, মূলস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সংস্থাটির প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি বাংলাদেশ। টাকা ছাপিয়ে সংকট সামাল দেওয়ার ঝুঁকি আছে। এতে করে মূল্যস্ফীতি আরেক দফা বাড়তে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংক যে কৌশল নিয়েছে তা সতর্কতার সঙ্গে বাস্তবায়ন করতে হবে। কোন কারণে পরিকল্পনা সফল না হলে ঝুঁকি বাড়বে।

পরের অর্থবছরেই দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে এমন পূর্ভাবাস দিয়ে আইএমএফ বলছে, চলতি বছর জিডিপি প্রবৃদ্ধি নামবে ৩.৮ শতাংশে। অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বৈদেশিক সহায়তা জরুরি। তাই কর জিডিপি রেশিও বাড়ানোর দরকার।

আইএমএফের মিশন প্রধান জানান, ঋণের চতুর্থ কিস্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে ৫ ফেব্রুয়ারির বোর্ড মিটিংয়ে। পাশাপাশি নতুন করে চাওয়া ৭৫ কোটি ডলারের অনুমোদনও যদি মেলে তাহলে চলতি অর্থবছরে পাওয়া যাবে ১৩০ কোটি ডলারের ঋণ সহায়তা। যে অর্থ বাংলাদেশ পাবে ফেব্রুয়ারির শেষ নাগাদ।