যশোর-৪ আসনের সাবেক এমপি রণজিতের উত্থান যেনো রূপকথাকেও হার মানায়। এমপি নির্বাচিত হওয়ার পরে সামান্য টিনের ঘর থেকে বদলে গেছে বহুতল ভবনে। ১৬ বছরে তার সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে শতগুণ। তার উত্থান যেনো রূপকথাকেও হার মানায়। তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ বহু পুরানো। এমনকি নিস্তার পায়নি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শ্মশানের জমিও।
জানা যায়, আওয়ামী লীগের মনোনয়নে ২০০৮ সালে প্রথমবার যশোর ৪ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন রণজিত রায়। তারপর থেকেই তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, জমি দখল, নিয়োগ বাণিজ্য, নির্যাতন আর দুর্নীতির ব্যাপক অভিযোগ উঠতে থাকে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বিভিন্ন প্রকল্প অধিগ্রহণের নামে জমি দখল করেছেন। এমনকি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেয়ার আশ্বাসে হাতিয়ে নিয়েছেন কবিপুল পরিমাণে টাকা। এমপি নির্বাচিত হওয়ার আগে ছিলো সামান্য টিনের ঘর, তবে সেটা বদলে গেছে বহুতল ভবনে। স্থানীয়রা দাবি তোলেন, ১৮ সালের নির্বাচনের হলফনামা মিলালে দেখা যাবে এখন তার কতগুণ অর্থ, সম্পদ বেড়েছে। এছাড়াও নিজের মায়ের নামে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের চাঁদার টাকায় কেনা খাজুরা কেন্দ্রীয় শ্মশানের ৭৭ শতক জমি জালিয়াতি করে নিজের নামে রেজিস্ট্রি করে নিয়েছেন রণজিত। এছাড়া অনেকের জমি জোর কোরে লিখে নেওয়ার অসংখ্য অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। স্থানীয় একজন বলেন, ৪০-১০০০ টাকা পর্যন্ত অনুদান দিয়ে আমরা ৭৭ শতাংশ জমি ক্রয় করেছি। কিন্তু পরবর্তীতে দেখা যায় এমপির নামে রেজিস্ট্রি হয়ে গেছে।
নামে বেনামে ১৬ বছরে গড়েছেন বিত্তের পাহাড়। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হলফনামায় রণজিতের সম্পদ বেড়েছে ১শ গুনেরও বেশি। বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। রণজিত পরিবারের অত্যাচার থেকে বাদ যাননি নিজ দলের নেতাকর্মীরা।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অভিযোগ, বিভিন্ন কৌশলে টাকা পয়সা লুটপাট করেছে। নিয়োগ বাণিজ্য করে বেশি ক্ষতি করেছে। এমনকি তিনি একাই দলকে নষ্ট করেছে বলেও অভিযোগ তাদের।
যশোর বাঘারপাড়া বন্দলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সবদুল হোসেন খান বলেন, আমি যতটুকু জানি নিরাপত্তার কারণে নিজ ছেলের কাছে ভারতে আশ্রয় নিয়েছে।
সম্প্রতি সাবেক এই জনপ্রতিনিধির সম্পদ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। এ ব্যাপারে যশোর সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি অধ্যক্ষ শাহীন ইকবাল বলেন, তারা অত্যন্ত সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে এমন অঢেল সম্পত্তি বেড়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে এমন ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।
বর্তমানে অঢেল সম্পদ নিয়ে ৫ আগস্টের পর থেকে আত্মগোপনে সাবেক এই এমপি।