তিন মাসের জন্য বন্ধ সুন্দরবনের দুয়ার। আজ শনিবার (১ জুন) থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনের সব নদী ও খালে মাছ ধরা বন্ধের পাশাপাশি পর্যটক প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বন্ধ করা হয়েছে সুন্দরবনে প্রবেশের সব ধরনের পাস-পারমিট।

গতকাল শুক্রবার (৩১ মে) বিকেলে সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবু নাসের মোহসিন হোসেন এ নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

সুন্দরবনের নদী-খালে মাছ এবং বনে প্রাণীদের বিচরণ ও প্রজনন কার্যক্রমের সুরক্ষায় সরকারি এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বন বিভাগের কর্মকর্তারা।

আবু নাসের মোহসিন হোসেন বলেন, ‘আগামীকাল শনিবার (১ জুন) থেকে তিন মাসের জন্য জেলে-বাওয়ালিদের সুন্দরবনে প্রবেশ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি পর্যটকরাও এ সময়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারবে না। ১ সেপ্টেম্বর থেকে পুনরায় সবার জন্য সুন্দরবনের দুয়ার খুলে দেওয়া হবে।’

বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সুন্দরবনে মৎস্য সম্পদ রক্ষায় সমন্বিত সম্পদ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার (আইআরএমপি) সুপারিশ অনুযায়ী, ২০১৯ সাল থেকে প্রতি বছরের ১ জুলাই থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত দুই মাস সুন্দরবনের সব নদী ও খালে মাছ আহরণ বন্ধ থাকত। ২০২১ সালে মৎস্য বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে এ নিষেধাজ্ঞা এক মাস বৃদ্ধি করে ১ জুন থেকে করা হয়েছে। সেই থেকে ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তিন মাস বনের সব নদী ও খালে মাছ আহরণ বন্ধ রাখা হচ্ছে। এ সময় পর্যটক প্রবেশ, সাধারণ মানুষের চলাচলসহ সুন্দরবনের নদী-খালে মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকবে।

খুলনার বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, ‘সরকারি সিদ্ধান্তে ২০২১ সাল থেকে ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনে সব ধরনের সম্পদ আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় এ বছরেও এটা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। মূলত সুন্দরবনের প্রাণী ও জীববৈচিত্র্যসহ মৎস্য সম্পদ রক্ষার উদ্দেশ্যে এই তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়ে থাকে।’

এদিকে, তিন মাস সুন্দরবনে প্রবেশ নিষিদ্ধ করায় বিপাকে পড়েছেন সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল কয়েক লাখ মানুষ। তিন মাস সুন্দরবনে প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকায় এ সময় তাদের কোনো রোজগারের পথ থাকবে না। শুধু সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জ এলাকার প্রায় ৫০ হাজার মানুষ জীবন নির্বাহের জন্য সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল। সুন্দরবনে মাছ, কাঁকড়া ও মধু আহরণ করেই তাদের সংসার চলে। তিন মাস পাস বন্ধ থাকবে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তারা।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সুন্দরবনে প্রবেশ তিন মাস বন্ধ থাকবে। তবে এই সময়ে জেলেদের মৎস্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হবে।