গাজার অনেক বাস্তুচ্যুত নাগরিকই এখন খোলা আকাশের নিচে, পার্কে দিন কাটাচ্ছেন। ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের ত্রাণ বিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ-এর প্রধান জুলিয়েট তৌমা এ তথ্য জানিয়েছেন। জাতিসংঘের মানবিক কার্যালয়ের (ওসিএইচএ) তথ্য অনুসারে, সাম্প্রতিক সময়ে মিশরের সীমান্তবর্তী গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফা শহরে কমপক্ষে এক লাখ মানুষ পালিয়ে গেছে।

ইউএনআরডব্লিউএ জানিয়েছে, জাতিসংঘকে সীমিত সহায়তা সরবরাহ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। জুলিয়েট তৌমা বলছেন, গাজায় দিন দিন মানবিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তা আরও বাড়ছে।

তিনি বলেন, গাজা উপত্যকায় যেসব এলাকায় আমাদের প্রবেশ করা উচিত সেখানে প্রবেশের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। তবে ইসরায়েলের দাবি, তারা মানবিক সহায়তা প্রবেশের ক্ষেত্রে কোনো সীমাবদ্ধতা আরোপ করেনি। বরং, এটি সংস্থাটির বিতরণের সমস্যা।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। সে সময় ইসরায়েলে ১২০০ জন নিহত হয় এবং আরও ২৪০ জনকে জিম্মি হিসেবে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপরেই গাজায় পাল্টা আক্রমণ চালায় ইসরায়েল।

দুই মাসের বেশি সময় ধরে গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি সৈন্যরা। বাড়ি-ঘর, স্থাপনা, আবাসিক এলাকা, এমনকি হাসপাতাল, মসজিদ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা বিভিন্ন দাতব্য সংস্থাও হামলা থেকে বাদ পড়ছে না। গাজার কোনো জায়গাই এখন আর ফিলিস্তিনিদের জন্য নিরাপদ নয়।

হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় গাজায় ২১ হাজার ৬৭২ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও ৫৬ হাজার ১৬৫ জন।

সংঘাত শুরুর পর থেকেই ৪১ কিলোমিটার (২৫ মাইল) দীর্ঘ এবং ১০ কিলোমিটার প্রশস্ত এই উপত্যকায় মানবিক সহায়তা প্রবেশের ক্ষেত্রে কঠোরভাবে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।

গাজায় সামরিক অভিযানের শুরুতে উত্তরাঞ্চলের দিকে বেশি মনযোগ দিয়েছিল ইসরায়েল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিসকে হামাসের শক্তিশালী ঘাঁটি দাবি করে সেখানে হামলা বাড়ানো হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, সবদিক দিয়েই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল।