রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও মিরপুরের বাসা-বাড়ির ৪০ ভাগ পানিতে মিলেছে মানুষের মলের জীবাণু। না জেনেই এসব দূষিত পানি পান করা ও দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার করছেন নগরবাসী। জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের গবেষণায় উঠে এসেছে এই বাস্তবতা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর জন্য প্রধানত দায়ী অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা।

দুই কোটি মানুষের শহর রাজধানী ঢাকা। অবকাঠামোর উন্নয়ন হলেও সবার জন্য নিরাপদ পানি নিশ্চিত করা যায়নি এখনও। সরবরাহ করা পানিতে রোগ-জীবাণুর অভিযোগ নতুন কিছু নয়।

পানিতে ক্ষতিকর কিছু আছে কিনা, জানতে মিরপুর ও যাত্রাবাড়ীর বিভিন্ন বাসা-বাড়ি থেকে পানির ১৫০টি নমুনা সংগ্রহ করে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট। ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত সংগ্রহ করা হয় নমুনা। এতে দেখা যায়, ৩০ ভাগ খাওয়ার পানির পাত্রে মিলেছে ব্যাকটেরিয়া। সবচেয়ে বেশি ৭৫ ভাগ পানির ট্যাঙ্কিতেই পাওয়া গেছে জীবাণু।

জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের গবেষণায় দেখা যায়, যাত্রাবাড়ী ও মিরপুর এলাকার বাসা-বাড়ির খাওয়ার পানিতে ৩০ ভাগ, রান্নাঘরের পানিতে ২৫ ভাগ, গোসলের পানিতে ৪৫ ভাগ, ট্যাঙ্কির ৭৫ ভাগ পানিতে মলের জীবাণু পাওয়া গেছে।

জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসির উদ্দীন বলেন, ‘যদি কোনো কারণে পানি কনটামিনেটেড হয়, ফিকাল দিয়ে, প্রস্রাব-পায়খানা দিয়ে, তাহলেই অর্গানিজম চলে আসে সুপেয় পানিতে। আমাদের ধারণা, যে এলাকায় আমরা পানিতে জীবাণু পেয়েছি তার কারণ হতে পারে পানিতে এসব অন্য কোনো সোর্স থেকে এসেছে। পানি আসার সিস্টেমে কনটামিনেশন হয়েছে। আরেকটা কারণ হতে পারে পানির ট্যাঙ্কি পরিষ্কার না করা।’

পানিতে তিন ধরনের ব্যাকটেরিয়া পেয়েছেন গবেষকরা। এসব জীবাণু আসে মানুষের মল থেকে। ডায়রিয়া, কলেরা, টাইফয়েড, হেপাটাইসিস ও অ্যামিবিয়াসিস রোগের কারণ এসব ব্যাকটেরিয়া।

ডা. নাসির উদ্দীন বলেন আরও বলেন, দীর্ঘদিন যদি রোগগুলো কোনো মানুষের থাকে তখন তার ক্রনিক ডিজিজ হয়ে যায়। তখন সে দুর্বল হতে থাকে, শারীরিক সক্ষমতা কমতে থাকে। তখন সে ঠিক মতো পরিবারে কন্ট্রিবিউট করতে পারে না।

ঝুঁকি এড়াতে সরাসরি না খেয়ে পরিশোধন করা পানি খাওয়ার পরামর্শ গবেষকদের।