রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের ‘ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল’ বা ইউরেনিয়াম হস্তান্তর করা হয়ছে। বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোম্বর) বিকেল ৩টায় ইউরেনিয়াম হস্তান্তরের মাধ্যমে বাংলাদেশে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে। দুই দেশের সরকার প্রধানের ঐতিহাসিক কমিশনিংয়ের মধ্যদিয়ে পরমাণু যুগে প্রবেশ করলো বাংলাদেশ। ইউরেনিয়াম হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এছাড়া আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসিও যুক্ত ছিলেন।
ইউরেনিয়াম হস্তান্তর অনুষ্ঠান ঘিরে সাজ সাজ রব ছিল পাবনাজুড়ে। রূপপুর প্রকল্প ও গ্রিন সিটি আবাসিক এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়। প্রকল্প এলাকাজুড়ে বাংলাদেশ ও রাশিয়ার জাতীয় পতাকার পাশাপাশি বিভিন্ন রঙের পতাকা শোভা পাচ্ছে। এর আগে ২৯ সেপ্টেম্বর সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বিশেষ নিরাপত্তায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান এসে পৌঁছায়। সেদিন ঈশ্বরদীর তিনটি মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। উৎসুক এলাকাবাসী সড়কের পাশের দোকানপাট, বাসাবাড়ির ছাদ ও দূর থেকে মহাসড়ক দিয়ে ইউরেনিয়ামবাহী গাড়িবহর দেখে উল্লাস প্রকাশ করেন।
২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার ছিল রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ। তিন মেয়াদে একটানা প্রায় ১৫ বছর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ। ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে স্বপ্নের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প এখন বাস্তবে রূপ নিয়েছে। দেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল এ প্রকল্প নির্মাণের ফলে আওয়ামী লীগ সরকার তার আরও একটি নির্বাচনী ইশতেহার পূরণ করলো।
১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি খরচের এ প্রকল্পে ৯০ শতাংশ টাকা ঋণ দিয়েছে রাশিয়া। একই সঙ্গে আন্তঃরাষ্ট্রীয় কয়েকটি চুক্তির মাধ্যমে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ কারে ঠিকাদার এটমস্ট্রয় এক্সপোর্ট। বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের পাশাপাশি এটি পরিচালনার জন্য জনবলও তৈরি করে দিচ্ছে রাশিয়া। ইতিমধ্যে প্রকল্প এলাকায় পৌঁছেছে প্রকল্পের ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল বা ইউরেনিয়াম।