সিঙ্গাপুরে অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে শুরু হওয়া কঠোর অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অভিযানে এ পর্যন্ত ২৮০ কোটি সিঙ্গাপুরি ডলার (২০০ কোটি মার্কিন ডলার) সমমূল্যের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। গতকাল মঙ্গলবার পার্লামেন্টে এক প্রশ্নের জবাবে দেশটির স্বরাষ্ট্রবিষয়ক দ্বিতীয় মন্ত্রী জোসেফাইন টিও এ কথা জানান। খবর সিএনএ ও দ্য স্ট্রেইটস টাইমসের।

মন্ত্রী বলেন, বড় বড় অপরাধীদের বিরুদ্ধেও যে কঠোর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে, এটি তারই প্রমাণ। সম্প্রতি গ্রেপ্তার ও তদন্তে এটাই প্রমাণিত হয়েছে, সিঙ্গাপুর সন্দেহজনক ব্যক্তি ও কর্মকাণ্ড শনাক্ত করতে সক্ষম। অর্থ পাচারবিরোধী ব্যবস্থা পর্যালোচনার জন্য একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় প্যানেল গঠন করা হচ্ছে বলেও জানান টিও।
এদিন পার্লামেন্টে আইনপ্রণেতাদের প্রায় ৬০টি প্রশ্নের জবাব দেন টিওসহ সরকারের তিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তারা জানান, অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো পরিদর্শন অব্যাহত রয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ম লঙ্ঘন করেছে—এমন প্রমাণ পেলে যে কোনো প্রতিষ্ঠান ও তার কর্মীদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

টিও জানান, ২০২১ সালে বেশ কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সন্দেহভাজন লেনদেনের খবর পাওয়ার পর থেকেই বিষয়টি নজরে রাখছে পুলিশ। চীনা কর্তৃপক্ষের চাপে অর্থ পাচারবিরোধী অভিযান শুরু হয় বলে যে কথা উঠেছে, তা নাকচ করে দেন তিনি। বলেন, এ দাবি অসত্য ও গুজব। সিঙ্গাপুরে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে—এমন সন্দেহ থেকে আমরা তদন্ত শুরু করেছিলাম। নিশ্চিত হওয়ার পর আমরা কাজ শুরু করি।

উল্লেখ্য, এর আগে গত আগস্টের মাঝামাঝি অভিযান চালিয়ে ১০ বিদেশিকে গ্রেপ্তার করে সিঙ্গাপুর কর্তৃপক্ষ। সে সময় জব্দ করা হয় বিলাসবহুল সম্পত্তি, গাড়ি, স্বর্ণের বার, ডিজাইনার হ্যান্ডব্যাগ এবং প্রায় ১০০ কোটি সিঙ্গাপুরি ডলার মূল্যের গহনা। সে সময় গ্রেপ্তার হওয়া বিদেশিদের বয়স ৩১ থেকে ৪৪ বছরের মধ্যে। তারা চীন, তুরস্ক, সাইপ্রাস, কলম্বিয়া, কম্বোডিয়া এবং ভানুয়াতুর নাগরিক। এরপর তদন্তের অংশ হিসেবে সিঙ্গাপুরে ৯৪টি প্রপার্টি এবং ৫০টি যানবাহনের বিরুদ্ধে নিষ্পত্তি নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এ ছাড়া নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয় বেশ কিছু স্বর্ণালংকার, পানীয় ও মদের বোতলের ওপর।