বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করাতে হলে তাকে আদালতে গিয়ে আবেদন করতে হবে। আদালত যদি অনুমতি দেন তাহলে তিনি বিদেশে যেতে পারবেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভয়েস অব আমেরিকার শতরূপা বড়ুয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা জানান।

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ভালো নয় বলে তার পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন। এজন্য তাকে বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসা করাতে চান তারা- এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘আমি জিজ্ঞেস করি, পৃথিবীর কোন দেশ সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে পেরেছে? পৃথিবীর কোনো দেশ দেবে? তাদের (বিএনপি) যদি চাইতে হয় তাহলে আবার আদালতে যেতে হবে। আদালতের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। এখানে আদালতের কাজের ওপর আমাদের হস্তক্ষেপ করার কোনো সুযোগ নেই।’

‘তবে হ্যাঁ, যেটুকু করতে পেরেছি তার (খালেদা জিয়া) জন্য, সরকার হিসেবে আমার যেটুকু ক্ষমতা আছে, সেখানে তার সাজা স্থগিত করে বাড়িতে থাকার পারমিশন (অনুমতি) দেওয়া হয়েছে। সে নিজেই চিকিৎসা নিচ্ছে এখন। বাংলাদেশের সব থেকে দামি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। যদি তাকে বাইরে যেতে হয়, তাহলে তাকে যে বাসায় থাকার পারমিশন দিয়েছি, এটা আমাকে উইথড্র (উত্তোলন) করতে হবে। তাকে আবার জেলে যেতে হবে, কোর্টে যেতে হবে। কোর্টের কাছে আবেদন করতে হবে। কোর্ট যদি রায় দেন, তখন সে যেতে পারবে। এটা হলো বাস্তবতা।’

এদিকে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি আছেন খালেদা জিয়া। গত ৯ আগস্ট থেকে তিনি হাসপাতালে। এরমধ্যে তিন দফায় তাকে সিসিইউতে নেওয়া হয়। তিনি অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন। তার লিভার, হৃদযন্ত্র ও কিডনির সমস্যা জটিল অবস্থায় আছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

এ অবস্থায় সবশেষ ২৫ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসা দেওয়ার অনুমতি চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন তার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের সাজা হয়। সেদিন থেকে কারাবন্দি হন তিনি। পরে হাইকোর্টে এ সাজা বেড়ে ১০ বছর হয়। এরপর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার আরও সাত বছরের সাজা হয়।

২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার খালেদা জিয়ার দণ্ড ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে। এরপর প্রতি ছয় মাস পরপর তার মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে সরকার।