বিশ্বের সবচেয়ে ধীরগতির শহরের তালিকায় শীর্ষস্থান দখল করেছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। ধীরগতির শহরের তালিকায় শীর্ষ ২০টি শহরের মধ্যে তিনটিই বাংলাদেশের। বিপরীতে সবচেয়ে দ্রুত গতির ২০ শহরের মধ্যে ১৯টিই যুক্তরাষ্ট্রের।

গতকাল বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দেশটির ম্যাসাচুসেটসের ন্যাশনাল ব্যুরো অব ইকোনমিক রিসার্চের এক গবেষণা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে।

ন্যাশনাল ব্যুরো অব ইকোনমিক রিসার্চ ১৫২টি দেশের ১ হাজার ২০০-এরও বেশি শহরের মোটরযানের গড় গতির ওপর গবেষণা চালিয়েছে। গবেষণা থেকে দেখা গেছে, দরিদ্র দেশগুলোর তুলনায় ধনী দেশগুলোর শহরগুলোতে মোটরযানের গড় গতি অন্তত ৫০ শতাংশ বেশি।

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা সূচকে ০.৬০ পয়েন্ট নিয়ে ধীরগতির তালিকার শীর্ষে রয়েছে। তালিকার দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে নাইজেরিয়ার দুই শহর লাগোস ও ইকোরদু। তালিকার চতুর্থ স্থানে রয়েছে ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলা। পঞ্চম স্থানে রয়েছে প্রতিবেশী ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের থানে জেলার শহর বিওয়ান্দি। পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা রয়েছে তালিকার ৬ নম্বরে।

ধীরগতির শীর্ষ ১০ শহরের মধ্যে স্থান করে নিয়েছে বাংলাদেশের আরও একটি শহর। বিভাগীয় শহর ময়মনসিংহ রয়েছে তালিকার ৯ নম্বরে। তালিকার ১২ নম্বরে রয়েছে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী বলে খ্যাত শহর চট্টগ্রাম। এর পরেই রয়েছে ভারতের বন্দরনগরী ও প্রাচীন শহর মুম্বাই। তবে একক দেশ হিসেবে ধীরগতির শীর্ষ ২০ শহরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শহর ভারতের। শীর্ষ ২০টির মধ্যে এককভাবে ভারতেরই রয়েছে ৮টি শহর।

বিপরীতে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতির শহরের তালিকার শীর্ষ ২০-এর ১৯টিই যুক্তরাষ্ট্রের। সূচকে দশমিক ৪৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে মিশিগানের শহর ফ্লিন্ট। তালিকার শীর্ষ থেকে শুরু করে ১৮ নম্বর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের শহর। দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে গ্রিনসবোরো ও উইচিতা। শীর্ষ ২০-এ কানাডার একটি মাত্র শহর স্থান করে নিয়েছে। সেটি হলো উইন্ডসর। রয়েছে তালিকার ১৯তম অবস্থানে।

শহরের আয়তনের অনুপাতে সবচেয়ে বেশি মোটরযান রয়েছে কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোতায়। এর পরই রয়েছে রাশিয়ার শহর ক্রাসনোদার। তালিকার তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে রয়েছে যথাক্রমে মঙ্গোলিয়ার উলানবাটর ও রোমানিয়ার বুখারেস্ট। এর পরের শহরগুলো হলো—মস্কো, ব্যাংকক, ম্যানিলা, ব্যাঙ্গালোর, ভ্লাদিভস্টক, মেক্সিকো সিটি, লাগোস, লন্ডন, মুম্বাই, ইয়াকাতেরিনবার্গ, গুয়াতেমালা সিটি, পানামা সিটি, নাইরোবি, নিউইয়র্ক, সান ডোমিঙ্গো ও দিল্লি।

ন্যাশনাল ব্যুরো অফ ইকোনমিক রিসার্চের একটি কার্যপত্র হিসাবে প্রকাশিত সমীক্ষা অনুসারে, একটি শহরে ভ্রমণের গতি শুধুমাত্র আংশিকভাবে তার রাস্তায় যানবাহনের পরিমাণের সাথে সম্পর্কিত। অন্যান্য কারণগুলি, যেমন একটি শহরের রাস্তার বিন্যাস এবং গুণমান এবং পাহাড় এবং নদীর মতো প্রাকৃতিক প্রতিবন্ধকতাগুলি কীভাবে দ্রুত গাড়ি চালাতে পারে তাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ফলস্বরূপ, অধ্যয়নের লেখকরা ভ্রমণের গতি, ট্রাফিক দ্বারা প্রভাবিত না হওয়া একটি পরিমাপ এবং যানজটের মধ্যে একটি পার্থক্য তৈরি করে, যা গতি এবং ট্র্যাফিকের মিথস্ক্রিয়া।

ন্যাশনাল ব্যুরো অফ ইকোনমিক রিসার্চের একটি কার্যপত্র হিসাবে প্রকাশিত সমীক্ষা অনুসারে, একটি শহরে ভ্রমণের গতি শুধুমাত্র আংশিকভাবে তার রাস্তায় যানবাহনের পরিমাণের সাথে সম্পর্কিত। অন্যান্য কারণগুলি, যেমন একটি শহরের রাস্তার বিন্যাস এবং গুণমান এবং পাহাড় এবং নদীর মতো প্রাকৃতিক প্রতিবন্ধকতাগুলি কীভাবে দ্রুত গাড়ি চালাতে পারে তাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ফলস্বরূপ, অধ্যয়নের লেখকরা ভ্রমণের গতি, ট্রাফিক দ্বারা প্রভাবিত না হওয়া একটি পরিমাপ এবং যানজটের মধ্যে একটি পার্থক্য তৈরি করে।

ফিনল্যান্ডের আল্টো ইউনিভার্সিটির একজন অর্থনীতিবিদ এবং গবেষণাপত্রের প্রধান লেখক প্রতয় আকবর বলেছেন, “সবচেয়ে ধীরগতির শহরগুলি কিন্তু সবচেয়ে বেশি যানজটপূর্ণ নয়। আবার সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ শহরগুলি সবচেয়ে ধীরগতির নয়।”

তিনি বলেন, “সবচেয়ে দ্রুতগতির সব শহরই ধনী দেশে, এবং সব ধীর শহরগুলোই দরিদ্র দেশে।”