দাঁত দিয়ে নখ কাটার অভ্যাস ছোট-বড় অনেকের মধ্যেই দেখা দেয়। মূলত ছোটকাল থেকেই এই অভ্যাসের সূত্রপাত। এরপর বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে এ সমস্যা। অনেকে তো মাথায় কোনো চিন্তা ঘুরপাক খেলেই দাঁত দিয়ে নখ কাটেন।

আবার অনেকে আছেন যারা কাজ থেকে একটু অবসর মিলতেই বসে বসে পায়ের ফাটা গোড়ালি থেকে ছাল তোলেন, কেউ আবার মাথার নির্দিষ্ট কিছু অঞ্চল থেকে অভ্যাসবশত চুল তুলতে থাকেন।

ফলে মাথার ওই অংশ ফাঁকা হতে থাকে। এমনই উদ্ভট কিছু অভ্যাস থাকে অনেকের মধ্যেই। জানলে অবাক হবেন, এসব অভ্যাসও কিন্তু রোগের কারণেই হয়।

চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় একে ‘ট্রিকোটিল্লোম্যানিয়া’ বলে। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, এ ধরনের অভ্যাস বদলের ক্ষেত্রে শুধু মানসিকতা নয়, সঙ্গে বিশেষ এক পদ্ধতিতে হাত ঘষার অনুশীলন করাও জরুরি।

জামা ডার্মাটোলজি নামক জার্নালে গবেষণাপত্রে প্রকাশিত তথ্যে বলা হয়েছে, দিনে অনন্ত দুবার দুটি হাতের তালু, আঙুলের ডগা বা কনুইয়ের বিপরীত দিক একত্রিত করে ঘষতে পারলে এই অভ্যাসের প্রবণতা কমতে পারে।

২০২২ সালে অনলাইনে পরিচালিত এক গবেষণায় প্রাথমিকভাবে ৪৮১ জন অংশগ্রহণকারীকে মূল্যায়ন করা হয়। পরবর্তীসময়ে অন্যদের বাদ দিয়ে ২৬৮ জন অংশগ্রহণকারীর উপরে একটি চূড়ান্ত সমীক্ষা করা হয় ছয় সপ্তাহ ধরে। এরপর জানা যায়, তাদের মধ্যে ৫৩ শতাংশই এই পদ্ধতিতে উপকার পেয়েছেন।

‘টিএলসি ফাউন্ডেশন ফর বডি-ফোকাস্ড রিপিটেটিভ বিহেভিয়ার্স’র দেওয়া রিপোর্ট বলছে, বিশ্বের প্রায় ৫ শতাংশ মানুষের মধ্যেই দাঁত দিয়ে নখ কাটা, ছাল তোলা বা মাথার চুল ছেঁড়ার অভ্যাস আছে।

সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের দুটি দলে ভাগ করে প্রথম দলটিকে এই অভ্যাস ছাড়ানোর চিকিৎসার মধ্যে দিয়ে ও দ্বিতীয় দলটিকে ওই বিশেষ পদ্ধতিতে হাত ঘষার অনুশীলনের মধ্যে রাখা হয়। দ্বিতীয় দলটির মধ্যে ৮০ শতাংশই জানিয়েছেন তাদের অভ্যাসে বদল এসেছে।

জার্মানির ইউনিভার্সিটি মেডিকেল সেন্টার হামবার্গ-এপেনডর্ফের ক্লিনিক্যাল নিউরোসাইকোলজি বিভাগের প্রধান গবেষক স্টিফেন মর্টিজ এ বিষয়ে জানান, বিকল্প এই চিকিৎসার নিয়ম হল শুধু নিজের দেহে আলতো করে ছোঁয়া।

মানসিক উদ্বেগ বা চাপের মধ্যে থাকলে একটু জোরেও হাতের তালু ঘষতে পারেন। তবে বেশি জোরে নয়। নিয়মিত এই অনুশীলন মানসিক উত্তেজনা কমাতে সাহায্য করে।