সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১০ টাকা কমিয়েছে সরকার। গত ১১ জুন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ তেলের দাম কমানোর ঘোষণা দেন। এর তিনদিন পরও বাজারে নতুন দামের সয়াবিন তেলের দেখা মিলছে না। বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামেই। ফলে সয়াবিন তেলের দাম কমানো হলেও ভোক্তারা সুফল পাচ্ছেন না।
ক্রেতারা বলছেন, যখন কোনো পণ্যের দাম বাড়ানো হয়, তখন সঙ্গে সঙ্গে বাজারে বাড়তি দামে বিক্রি করা হয়। অথচ দাম কমানোর ঘোষণা দিলে সেই পণ্য বাজারে কম দামে পেতে অনেক সময় লাগে। এ ব্যাপারে সরকারের পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তারা। জানা গেছে, বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১০ টাকা কমিয়ে ১৮৯ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। খোলা সয়াবিন তেল ১৬৭ টাকা লিটার ও পাম অয়েলের দাম দুই টাকা কমিয়ে ১৩৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বুধবার (১৪ জুন) রাজধানীর রামপুরা হাজিপাড়া ও সেগুনবাগিচা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আগের দামে বিক্রি হচ্ছে তেল। যেসব তেল বিক্রি হচ্ছে, সেগুলোর মোড়কে আগের দামই রয়েছে। খোলা সয়াবিন তেল লিটারপ্রতি ১৭৬ টাকা, বোতলজাত সয়াবিন লিটারপ্রতি ১৯৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল ৯৬০ টাকা, পাম সুপার খোলা সয়াবিন তেল লিটারপ্রতি ১৪৫ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। বাজারে নতুন দামের তেল আসেনি বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
এদিকে, গত ১১ জুন সয়াবিন তেলের দাম কমানো হলেও বাজারে নতুন দাম কবে থেকে কার্যকর হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। তবে সর্বশেষ যে দুই বার তেলের দাম বাড়ানো হয়েছিল, কোম্পানিগুলো সেসময় বিবৃতিতে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছিল, নতুন দাম কার্যকর হবে পরদিন থেকেই। বাজারেও দাম বাড়ানো ঘোষণার পর সেটা দ্রুত কার্যকর হয়। পুরোনো দামের আগের তেল খুচরা বিক্রেতারা বিক্রি করেন বাড়তি দামে।
তবে এ ঘোষণার পর পেরিয়ে গেছে আরও তিনদিন। এখনো আগের দাম লিটারপ্রতি ১৯৯ টাকা দরে সয়াবিন তেল কিনতে হচ্ছে ভোক্তাদের। অবশ্য রাজধানীর কিছু দোকানে আগের দামের ৫ লিটার সয়াবিন তেলের বোতল কিছুটা কম দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে। ব্যবসায়ীদের দাবি- নতুন দামের সয়াবিন তেল বাজারে আসতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে। রামপুরার ভাই ভাই স্টোরের বিক্রেতা ওমর ফারুক বলেন, দাম কমালেই তো আর সঙ্গে সঙ্গে সেই তেল বাজারে চলে আসে না। আরও কিছুদিন সময় লাগবে। আমরা কম দামে পেলে অবশ্যই কম দামে বিক্রি করবো।
সেগুনবাগিচার মুদি দোকানি আবু বক্কর বলেন, দাম বাড়লে কোম্পানিগুলো সঙ্গে সঙ্গে বাড়তি রেটে অর্ডার কাটতে শুরু করে। কমলে দিতে চায় না। তখন বলে সাপ্লাই কম এবং আগের দামের তেল নিতে হবে।
ক্রেতা এনামুল হক বলেন, দাম কমিয়েছে কাগজে-কলমে, বাস্তবে তো দেখছি না। বাজার মনিটরিং কোথায় করা হচ্ছে? আমার প্রশ্ন হলো- বাজার মনিটরিং কি শুধু খুচরা বাজারে করতে হবে? কোম্পানি, ডিলার, পাইকাররা কোন দামে বিক্রি করছে, সেটা কে দেখবে?