বহু আগের গবেষণা ও পরিসংখ্যান থেকে দেখা গিয়েছে, পুরুষদের চাইতে নারীদের মাঝে আলঝেইমারের সমস্যা দেখা দেওয়ার ঝুঁকি ও হার অন্তত দিগুণ। এমনটা হওয়ার পেছনে বিশেষ কোন কারণ আছে কী?

সেটা জানার আগে জানুন আলঝেইমার সমস্যাটি কি! আলঝেইমার হল প্রোগ্রেসিভ নিউরোলজিক্যাল ডিক্লাইন (Progressive Neurological Decline), যার ফলে স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে যায়, শর্ট টার্ম মেমরি লসের সমস্যাসহ অন্যান্য লক্ষণ প্রকাশ পেতে শুরু করে। ডিমেনশিয়ার অন্যতম কমন একটি কারণ হল আলঝেইমার।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আলঝেইমার অ্যাসোসিয়েশন ৬৫ বছরের বেশি অন্তত ৫ মিলিয়ন মানুষ আলঝেইমার সমস্যায় ভুগছেন। যার মাঝে দুই-তৃতীয়াংশই নারী। ২০৫০ সালের ভেতর এই সংখ্যাটি বেড়ে ১৪ মিলিয়নে পৌঁছাবে বলে আশঙ্কা করছে সংস্থাটি।

কিন্তু এই রোগে পুরুষদের চাইতে নারী আক্রান্তের সংখ্যা এতো বেশি হওয়ার কারণ কী? বহু বছর যাবত গবেষক ও নিউরো সায়েন্টিস্টরা ভেবে এসেছেন এক্ষেত্রে অবদান রাখে নারীদের আয়ু। পুরুষদের তুলনায় নারীদের আয়ু বেশি হয় বলে তাদের মাঝে আলঝেইমারের প্রভাব দেশি লক্ষ্য করা যায়। বলাই বাহুল্য, এই ধারণাটি ছিল একেবারেই ভুল।

সাম্প্রতিক সময়ের নতুন গবেষণার তথ্য ও ফল থেকে জানা যায় নারীদের মাঝে আলঝেইমারের সমস্যা বেশি দেখা যাওয়ার আসল কারণ, নারীদের সেক্স হরমোন ইস্ট্রোজেন (Estrogen).

পুরুষদের তুলনায় নারীদের মস্তিস্কে আলঝেইমার সম্পর্কিত পরিবর্তন আগে দেখা যায়, এবং এই পরিবর্তনটি আসে নারীদের মেনোপজ দেখা দেওয়ার সময়ে। কারণ এ সময়ে নারীদের শরীরে ইস্ট্রোজেন হরমোন তৈরি ও নিঃসরণ লক্ষণীয়ভাবে কমে যায়, এমনটাই জানাচ্ছে নিউরোলজির একটি গবেষণা।

এই গবেষণায় ইস্ট্রোজেন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি অথবা হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি (HRT) গ্রহণকারী নারীদেরও রাখা হয়েছিল। গবেষকেরা দেখেছেন, থেরাপি গ্রহণকারীদের মাঝে আলঝেইমারের ঝুঁকি যারা গ্রহণ করেননি তাদের চাইতে তুলনামূলক কম। অর্থাৎ ইস্ট্রোজেন হরমোনজনিত কারণেই নারীদের মাঝে আলঝেইমারের সমস্যা দেখা দেওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।