ইদানিং পিঠে ব্যথার সমস্যা অহরহ দেখা দেয়। পিঠে ব্যথা মূলত দেখা দেয় মেরুদণ্ড বা স্পাইনের ব্যথা থেকে। আমাদের প্রতিদিনের জীবনযাত্রার ধরণ ও অভ্যাস মেরুদণ্ডের ক্ষতির জন্য অনেকাংশে দায়ী। এ কারণে তরুণদের মাঝেও মেরুদণ্ডে ব্যথার সমস্যাটি দেখা দিচ্ছে। জেনে নিন কোন অভ্যাসগুলো ক্ষতি করছে মেরুদণ্ডের।

নির্দিষ্ট কিছু শরীরচর্চা

একদিকে শরীরচর্চা যেমন সুস্থতার চাবিকাঠি, অন্যদিকে এই শরীরচর্চা থেকেই দেখা দিতে পারে মেরুদণ্ডের সমস্যা। তবে সকল শরীরচর্চার ক্ষেত্রেই এই সমস্যাটি হবে না। সাইকেলিং ও স্পিন ক্লাসের মতো জনপ্রিয় ধরানার শরীরচর্চা থেকে মেরুদণ্ডের সমস্যাটি দেখা দিতে পারে। কারণ কিছু সাইকেলে সাইকেলিং করার জন্য ঝুঁকে থাকতে হয় দীর্ঘ সময়ের জন্য। যা পুরো মেরুদণ্ডের উপরেই প্রভাব ফেলে।

ধূমপান

ধূমপান ফুসফুসের সাথে হাড়ের ক্ষতিও করে। এই বাজে অভ্যাসের ফলে প্রিম্যাচিউর ডিস্ক ডিজেনারেশন দেখা দেয়। যার ফলে হার তার প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা হারায় এবং পুষ্টি শোষণ করতে পারে না। এতে করে সহজেই হার দুর্বল হয়ে পড়ে এবং মেরুদণ্ডের হাড় ক্ষয়প্রাপ্ত হয়।

দুধ ও দুগ্ধজাত খাবারের অপ্রতুলতা

হাড়ের গঠন ও দৃঢ়তার জন্য প্রয়োজন ক্যালসিয়াম এবং যার অন্যতম প্রধান উৎস হল দুধ ও দুগ্ধজাত খাদ্য উপাদান। যারা ল্যাকটোজ ইনটলারেন্ট তারা দুধ ও দুগ্ধজাত কোন খাবার খেতে পারেন না। ফলে শরীরে ক্যালসিয়ামের বড় ধরনের ঘাটতি দেখা দেয়। এই ঘাটতি থেকে সহজেই মেরুদণ্ডের হাড়ের সমস্যা শুরু হয়।

বাজে ভঙ্গীতে চেয়ারে বসা

প্রতিদিন অফিস ও বাসার চেয়ারে বাজে পশচার বা ভঙ্গীতে বসার দরুন একটা সময়ে গিয়ে ঠিকই মেরুদণ্ডের সমস্যা দেখা দেয়। বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে এমনিতেও আমাদের হাড় বুড়িয়ে যেতে থাকে। এর উপরে বাজে ভঙ্গিতে চেয়ারে বসে টেবিলে বা কম্পিউটারে কাজ করা ঘাড়, কাঁধসহ পুরো পিঠ ও মেরুদণ্ডকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। সামনের দিকে ঝুঁকে ও পিঠ বাঁকিয়ে কাজ করার ফলে মেরুদণ্ডের জয়েন্টগুলো স্থানচ্যুত হয়। এ কারণে টেবিলে বসে কাজ করার ক্ষেত্রে পিঠ একদম সোজা ও টানটান রেখে বসার পরামর্শ দেওয়া হয়।

স্মার্টফোনের প্রতি আসক্তি

দিনের বেশিরভাগ সময় মোবাইল স্ক্রিনের দিকে তাকিয়েই কাটিয়ে দেওয়া হয়? মোবাইল ফোনের অতি ব্যবহার চোখের ক্ষতির সঙ্গে ক্ষতি করতে আপনার মেরুদণ্ডেরও। খেয়াল করে দেখুন, মোবাইল স্ক্রিনের দিকে তাকানোর সময় আমরা মাথা ঝুঁকিয়ে রাখি। এতে করে ঘাড় ও কাঁধের উপর বাড়তি চাপ তৈরি হয়। এই চাপ সরাসরিভাবে মেরুদণ্ডের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

ভারি ব্যাগ বহন করা

হাত ব্যাগ বা ব্যাকপ্যাক- যেটাই হোক না কেন, অতিরিক্ত ভারি ব্যাগ বহনে কাঁধের পেশী ও হাড় স্ট্রেচড হয়ে পড়ে এবং অবশ অনুভূতির মতো ব্যথাভাব দেখা দেয়। এমন ভারি ব্যাগ প্রতিদিন বহন করা হলে একটা সময়ে মেরুদণ্ডেও ব্যথাভাব দেখা দেয়।

হাই হিলের জুতা

নিজেকে ফ্যাশনেবল দেখাতে হাই হিল জুতা অন্যতম একটি অনুষঙ্গ। আনকম্ফোর্টেবল হাই হিল পায়ে ব্যথাভাব তৈরির পাশাপাশি মেরুদণ্ডের উপরেও ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে দেয়। এতে করে লোয়ার ব্যক, ঘাড় ও কাঁধে ব্যথা দেখা দেয়। যেহেতু হাই হিলের উপর আমাদের শরীরের পুরো ওজন ও ভর থাকে, তার মাঝে সামঞ্জস্য আনতে মেরুদণ্ডের উপর বাড়তি চাপ তৈরি হয়। যা থেকে মেরুদণ্ডে ব্যথাভাব দেখা দেয়।