দুবাইয়ে অবস্থানরত ৪৫৯ বাংলাদেশি নাগরিকের সম্পদ ক্রয়ের অভিযোগ তদন্ত করতে গত ১৫ জানুয়ারি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) ৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত করে অগ্রগতি প্রতিবেদন হাইকোর্টে দাখিল করতে বলা হয়। তবে ৩০ দিনের জায়গায় প্রায় তিন মাস পেরিয়ে দুদক জানিয়েছে, অভিযোগ অনুসন্ধানে নেমেছে তারা। অন্য তিনটি সংস্থা এখনো কোনো কাজ শুরু করেনি।
গত বছর আমেরিকার সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড ডিফেন্স স্টাডিজ (সি৪এডিসি) তাদের গবেষণা প্রতিবেদনে জানায়, তথ্য গোপন করে ৪৫৯ জন বাংলাদেশি সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে মোট ৯৭২টি আবাসন সম্পদের মালিক হয়েছেন। এজন্য তারা খরচ করেছেন প্রায় ৩১৫ মিলিয়ন ডলার। দেশটিতে কমপক্ষে চার থেকে পাঁচজন বাংলাদেশি প্রায় ৪৪ মিলিয়ন ডলারের সম্পত্তির মালিক।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়,সম্পদের মধ্যে ৬৪টি দুবাইয়ের অভিজাত এলাকা দুবাই মেরিনা ও ১৯টি পাম জুমেইরাহতে অবস্থিত। যদিও প্রতিবেদনে কারো পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। এ বিষয়ে একটি বাংলা দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশের পর গত ১৫ জানুয়ারি ওই চার সংস্থাকে তদন্তের আদেশ দেন হাইকোর্ট। এখন সংস্থাগুলো বলছে, আদালতের আদেশের লিখিত কপি না পাওয়ায় তারা তদন্ত শুরু করতে পারেনি।
জানতে চাইলে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইম) হুমায়ুন কবির বলেন, দুবাইয়ে ৪৫৯ বাংলাদেশির সম্পত্তির বিষয়ে হাইকোর্টের আদেশের কোনো চিঠি তারা পাননি। চিঠি পেলে নিয়ম অনুযায়ী কাজ করা হবে।
হাইকোর্টের আদেশের পর গত ১৭ জানুয়ারি দুদক কমিশনার (তদন্ত) মো. জহুরুল হক গণমাধ্যমকে জানান, আমরা জেনেছি সুপ্রিম কোর্ট আমাদের তদন্ত করতে বলেছেন। আদেশটি এখনো হাতে পাইনি। আদেশ পেলে আমরা অবশ্যই তদন্ত করবো। তদন্ত করে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তথ্য-উপাত্ত যাচাই করা হবে। দেশ থেকে অর্থপাচার হয়ে থাকলে আমরা কাউকে ছাড় দেবো না।
সোমবার (১০ এপ্রিল) দুপুরে দুদকের সংশ্লিষ্ট একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জাগো নিউজকে জানিয়েছেন, দুবাইতে ৪৫৯ জন বাংলাদেশি নাগরিকের সম্পদ কেনার অভিযোগ অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। হাইকোর্টের এ সংক্রান্ত নির্দেশনা অনুসরণ করে সংস্থাটির প্রধান কার্যালয় থেকে অনুসন্ধান বিষয়ে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তিন সদস্যের তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে।
অর্থপাচার প্রতিরোধে দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজস্ব বোর্ডের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা জাগো নিউজকে জানান, চার সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এককভাবে তো কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। হয়তো যৌথ কমিটি করা হয়েছে। এ বিষয়ে খুব একটা জানা নেই।