পদ্মা সেতুতে পরীক্ষামূলক যাত্রায় ব্যবহার করা চাইনিজ কোচ যুক্ত হচ্ছে বেনাপোল এক্সপ্রেসে। সদ্য আমদানি করা অত্যাধুনিক সুবিধা সম্বলিত ১২টি বগি নিয়ে আগামী ১৮ এপ্রিল থেকে বেনাপোল-ঢাকা রুটে চলাচল করবে বেনাপোল এক্সপ্রেস। এর ফলে ভারত বাংলাদেশ দুদেশের যাত্রীসেবা বাড়বে। বাঁচবে সময়, সাশ্রয় হবে অর্থ। ভ্রমণপিপাসু মানুষের মধ্যে ফিরবে স্বস্তি।
ভারতগামী পাসপোর্ট যাত্রীসহ এই অঞ্চলের যাত্রীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে ঈদ উপহার হিসেবে এই বগি সংযুক্ত হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এর আগে, উন্নত সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত কোচ তুলে নিয়ে বেনাপোল এক্সপ্রেসে পুরোনো বগি সংযুক্ত করায় যশোরবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছিল। ওই ঘটনায় জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপিও দেওয়া হয়।
রেলওয়ে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ভারতগামী যাত্রীসহ এই অঞ্চলের যাত্রীদের সুবিধার কথা চিন্তা করে ২০১৯ সালের ১৭ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেনাপোল-ঢাকা রুটে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনের উদ্বোধন করেন। ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করা উন্নত সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত নতুন রেল কোচ দিয়ে এই সেবা চালু ছিল। কিন্তু এরপর করোনাকালে ট্রেনটি বন্ধ হয়ে যায়। দেড় বছর পর ২০২১ সালের ২ ডিসেম্বর ট্রেনটি চালু হলেও বদলে যায় উন্নত সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত কোচ। তার বদলে পুরোনো বগি দিয়ে বেনাপোল এক্সপ্রেস চালানো হয়। ছিল না কোনো শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত আসন। বিষয়টি নিয়ে যশোরবাসী জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেন।
গত ৬ এপ্রিল বাংলাদেশ রেলওয়ে, রাজশাহীর জেনারেল ম্যানেজারের (পশ্চিম) পক্ষে সহকারী চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট মো. আব্দুল আওয়াল স্বাক্ষর করা এক পত্রে জানানো হয়, সদ্য আমদানি করা চাইনিজ কোচ দিয়ে ৭৯৫/৭৯৬ নম্বর আন্তঃনগর বেনাপোল এক্সপ্রেস এবং ৭৬৬/৭৬৫ নম্বর নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনের রেক অনুমোদন করা হয়েছে। বেনাপোল থেকে ১৮ এপ্রিল এবং চিলাহাটি থেকে ১৭ এপ্রিল যাত্রা করা ট্রেন চলাচলের মাধ্যমে তা কার্যকর হবে।
বেনাপোল এক্সপ্রেস বর্তমানে ১০টি পুরোনো বগি নিয়ে যাতায়াত করছে। সেগুলো বদলে এখন ১২টি নতুন কোচ সংযুক্ত হচ্ছে। এতে দুটি এসি চেয়ারকোচ, একটি এসি কেবিন কোচসহ নামাজের ঘর, খাবারের বগি থাকবে। ফলে ৮৮৪টি আসনের ট্রেনটিতে যাতায়াত অনেক আরামদায়ক হবে।
বেনাপোল রেলওয়ের স্টেশন মাস্টার সাইদুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঈদ উপহার হিসেবে বেনাপোল এক্সপ্রেসে সদ্য আমদানি করা চাইনিজ কোচ যুক্ত হচ্ছে। পদ্মা সেতুতে পরীক্ষামূলক যাত্রায় এই কোচগুলো ব্যবহার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, উন্নতমানের কোচ সংযুক্ত করার ফলে ভারতে যাতায়াতকারী পাসপোর্ট যাত্রীসহ এই অঞ্চলের যাত্রীদের এই ট্রেনে ভ্রমণ আরামদায়ক হবে।
বাংলাদেশ ভারত চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক মতিয়ার রহমান জানান, মানব দরদী সরকারের সময়ে যোগাযোগ ব্যাবস্থায় একের পর এক মাইলফলকের সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে শিক্ষা স্বাস্থ্য কৃষি ব্যবসা ভ্রমণসহ রেলসেবাটি মাইলফলক হয়ে থাকবে।