ঈদের একদিন আগে ঢাকা থেকে বাড়ি যাবেন চুয়াডাঙ্গা জীবননগরের মিনজারুল ইসলাম। একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন তিনি। গাবতলীতে এসে সহজেই অগ্রিম টিকিট পেয়েছেন।
মিনজারুলের মতো অবস্থা প্রায় সব যাত্রীরই। খুব সহজেই গাবতলীতে মিলছে ঈদের অগ্রিম টিকিট। এতে খুশি যাত্রীরা।
শনিবার (৮ এপ্রিল) গাবতলী বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, অগ্রিম টিকিট সংগ্রহের কোনো চাপ নেই। অনেক যাত্রী অনলাইনে বাসের টিকিট সংগ্রহ করেছেন। আবার শহরের অলিগলিতে অনেক টিকিট কাউন্টার হওয়ায় কেউ কষ্ট করে গাবতলী আসতে চান না।
অন্যদিকে পদ্মা সেতুর কল্যাণেও চাপ কমেছে গাবতলীতে। আগে খুলনা, বরিশাল, গোপালগঞ্জ, নড়াইলের যাত্রীরা গাবতলী হয়ে বাড়ি ফিরতেন। তবে পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় এসব জেলার মানুষ আর গাবতলী আসেন না। এসব অঞ্চলের যাত্রী সায়েদাবাদ থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যাতায়াত করছেন। ফলে গাবতলী বাস টার্মিনালে সেই চিরচেনা ভিড় আর নেই।
অন্যদিকে, রাজশাহী ও রংপুর অঞ্চলের যেসব গাড়ি গাবতলী থেকে টিকিট দিচ্ছে সেগুলোতেও তেমন ভিড় দেখা যায়নি। এসব রুটের যাত্রীরা ঈদের অগ্রিম টিকিট দেওয়ার প্রথম দিনে, গতকালই (শুক্রবার) টিকিট সংগ্রহ করেছেন
ঢাকা-সাতক্ষীরাগামী রোজিনা এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার মোহাম্মদ সানোয়ার আলী বলেন, আগে ঈদের এসময় গাবতলীতে যাত্রীর অনেক ভিড় থাকতো। অথচ গাবতলী দেখে বোঝার উপায় নেই কয়েকদিন পর ঈদ। যাত্রীরা যে যেভাবে পারে পদ্মা সেতু হয়ে যাতায়াত করছে। আগে নড়াইল, বরিশাল, গোপালগঞ্জের মানুষ গাবতলী হয়ে যাতায়াত করতো। এখন রাজবাড়ী, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুরের যাত্রী, এমনকি যশোরের যাত্রীরাও পদ্মাসেতু হয়ে যাতায়াত করেন।
ঢাকা-গোপালগঞ্জ-কাজুলিয়া-কোটালিপাড়া রুটে যাতায়াত করে দিগন্ত পরিবহন। গত ৭ এপ্রিল থেকে অগ্রিম টিকিট দেওয়া শুরু করেছে পরিবহনটি। অথচ দ্বিতীয় দিনে এসেই কোনো ভিড় নেই। একসময় এই টিকিট কাউন্টারে অগ্রিম টিকিটের জন্য জটলা লেগে থাকতো।
দিগন্ত পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার জানান, সকাল থেকে দুটি অগ্রিম টিকিট বিক্রি হয়েছে। গাবতলীর সব যাত্রী পদ্মা সেতু হয়ে যাতায়াত করছে। গাবতলী একদম ফাঁকা। অনেক টিকিট কাউন্টারও বন্ধ। কেউ কেউ বসে অলস সময় পার করছেন।
গাবতলী বাস টার্মিনালের সঙ্গে বেড়িবাঁধ হয়ে বাবু বাজার দিয়ে পদ্মা সেতুর সঙ্গে সংযোগ সড়ক নির্মাণের দাবি করেছেন সংশ্লিষ্টরা। তা না হলে গাবতলী বাস টার্মিনাল একসময় বিলীন হয়ে যাবে বলে শঙ্কা তাদের।
দিগন্ত পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার রাশেদ বলেন, অগ্রিম টিকিটের কোনো যাত্রী নাই। গাবতলী ফাঁকা। মানুষ সব পদ্মা সেতু হয়ে যাতায়াত করে। আমরা যারা গাবতলীতে কাজ করে খায়, এটাও হারিয়ে যাবে। সরকারের কাছে দাবি গাবতলী মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ বাবুবাজার সেতু হয়ে পদ্মা সেতু সড়কের সঙ্গে লিংক করে দেওয়া হয় যেন। না হলে গাবতলী হারিয়ে যাবে।