ঠান্ডা খাবার খেতে কারই বা ভাল লাগে? কিন্তু ব্যস্ততার এ যুগে সব সময়ে রান্না করে গরম গরম খাওয়ার সময় থাকে না। একবারে অনেকটা রান্না করে, তা দিয়েই দু’-তিন বেলা চালিয়ে নেওয়ার প্রবণতা থাকে অনেকের। অনেকে আবার কাজের সূত্রে একাই বাড়িতে থাকেন। তাই একার জন্য রান্না করে খাওয়া বড় ঝক্কির কাজ। অতএব ভরসা করেন বাইরের খাবারে এবং খাওয়ার আগে কেবল গরম করে নিলেই হল।

কিন্তু চিকিৎসকদের মতে, কিছু কিছু খাবারের ক্ষেত্রে এই অভ্যাস মোটেই স্বাস্থ্যকর নয়। ‘জার্নাল অব এগ্রিকালচারকাল ফুড অ্যান্ড কেমিস্ট্রি’-র একটি প্রতিবেদনে একদল গবেষক এর ক্ষতিকর দিক নিয়ে সচেতন করেছেন।

বিস্তারিত প্রমাণ দিয়ে দেখিয়েছেন, মাইক্রোওয়েভে গরম করা খাবারে ভিটামিন বি১২ ক্রমে তার কার্যকরিতা হারায়। এক এক বার খাবার গরম করলে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ভিটামিন বি১২ নষ্ট হয় খাবারের।

তা ছাড়া, বেশ কিছু খাবার মাইক্রোওয়েভে গরম করলে সেই খাবারের খাদ্যগুণ নষ্ট হয় ব্যাপক ভাবে। জানেন কি কোন খাবারগুলি মাইক্রোওয়েভে গরম করা উচিত নয়?

মুরগির মাংস: মুরগির মাংস বেশি পরিমাণে রেঁধে ভাবছেন পরের দিন গরম করে খাবেন? এই ভুল না করাই ভাল। মুরগির মাংস গরম করার সময়ে প্রোটিনের গঠন খানিকটা বদলে যায়, যা খেলে বদহজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। একান্তই মাংস বেশি পরিমাণে রেঁধে ফেললে ফ্রিজ থেকে বার করে ঘরোয়া তাপমাত্রায় রেখে খান।

আলুর তরকারি: আলুর তরকারি গরম করে খাবেন না। এতে আলুর যে নিজস্ব পুষ্টিগুণ, তা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। গরম করা আলুর তরকারি খেলে পেটের সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি থেকে যায়।

শাক: যে কোনও ধরনের শাকও দ্বিতীয় বার গরম করা উচিত নয়। শাকে নাইট্রেট থাকে। রান্না করা শাকের তরকারি পুনরায় গরম করা হলে ওই নাইট্রেট থেকে নাইট্রোস্যামাইন নামের এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ তৈরি হয় যা শরীরের ক্ষতি করে।

ডিম: ডিমের ঝোল, ডিমের কষা, ডিম সেদ্ধ বা অমলেট, কোনওটিই গরম করে খাওয়া ভাল নয়। কারণ ডিম দ্বিতীয় বার গরম করলে তার প্রোটিন নষ্ট হয়ে যায় এবং ডিমের মধ্যেই নানা ক্ষতিকারক ব্যাক্টেরিয়া জন্মায়। এই ব্যাক্টেরিয়া পেটে গেলে শরীর খারাপ করে।

ভাত: অধিকাংশ বাড়িতে একসঙ্গে দু’বেলার ভাত তৈরি হয়। গ্যাস থেকে নামানোর পরে ভাত যদি ঘরোয়া তাপমাত্রাতেই রেখে দেয়া হয়, তা হলে ভাত যত ঠান্ডা হতে থাকে তত নানা ব্যাক্টেরিয়া জন্মায়। সেই ঠান্ডা হওয়া ভাত যদি আবার গরম করা হয়, তবে ব্যাক্টেরিয়াগুলির ক্ষতিকারক প্রভাব আরো বৃদ্ধি পায়।

চা: এটা আমাদের অনেকেরই জানা যে একবার চা বানানোর পর তা ঠাণ্ডা হয়ে গেলে পুনরায় গরম করা উচিত নয়। কারণ চায়ের মধ্যে ট্যানিক এসিড থাকে। তৈরি করা চা গরম করে পান করলে লিভারের ক্ষতি হতে পারে। তাই তৈরি চা আবার গরম করে খাবেন না।