দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের মাধ্যমে রপ্তানি ও রাজস্ব আয় বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। একই সঙ্গে বাড়বে কর্মসংস্থান। এ লক্ষ্যে আটটি কারখানার ভবন নির্মাণ করবে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা)। এসব ভবন নির্মাণ করে অধিক সংখ্যক শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে ফ্লোর স্পেস বরাদ্দ দেওয়া হবে। আরও বাড়বে বেপজার আয়।

বেপজার আওতাধীন ইপিজেডসমূহে ৮ কারখানা ভবন নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইপিজেডগুলোতে নির্মিত হবে ছয়তলা বিশিষ্ট ভবন। প্রকল্পের মোট প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৬৬ কোটি ৭১ লাখ ৯৬ হাজার টাকা। বাস্তবায়নের মেয়াদ ২০২৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ইপিজেডে বেপজার নিজস্ব মোট ৭৮টি কারখানা ভবনসহ ৯০টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব ভবনের স্পেস তিন লাখ ৩৮ হাজার ১৭৪ বর্গমিটার। পুরোটাই বিনিয়োগকারীদের জন্য বরাদ্দ। এছাড়া আরও দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান প্রতিনিয়ত এসব ভবন পরিদর্শন ও বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করছে। কিন্তু বরাদ্দ উপযোগী কারখানা ভবন না থাকায় বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন তাদের অনেকেই।

প্লট বরাদ্দের পরিবর্তে কারখানা ভবন নির্মাণ করে ফ্লোর স্পেস ভাড়া দিলে প্রায় ১১ গুণ আয় বাড়বে। ইপিজেডগুলোতে শিল্প প্লট খালি না থাকায় দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের চাহিদা মেটাতে কারখানা ভবন নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। রুগণ শিল্প প্রতিষ্ঠানের ছেড়ে দেওয়া প্লটে কারখানা ভবন নির্মাণ করে একাধিক শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব- বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

ভবন নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক নজরুল ইসলাম বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে। পাশাপাশি কর্মসংস্থানেরও সুযোগ সৃষ্টি হবে। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে বৈদেশিক আয়ও আসবে। বেপজার নিজস্ব আয়ে আটটি ভবন নির্মাণ করা হবে।

বেপজা আরও জানিয়েছে, কারখানা ভবন নির্মাণ করা হলে ফ্যাক্টরি স্ট্যান্ডার্ড নিশ্চিত করা যাবে।

চট্টগ্রাম ইপিজেডে প্রায় প্রতি ফ্লোরে দুই হাজার ২৭৮ বর্গমিটার হিসেবে চারটি ছয়তলা কারখানা ভবন নির্মিত হলে ৫৪ হজার ৬৭২ বর্গমিটার কারখানা ভবনের ফ্লোর স্পেস তৈরি হবে। তিন মার্কিন ডলার প্রতি বর্গফুটে মাসে ভাড়া বাবদ আয় হবে ১ লাখ ৬৪ হাজার ১৬ মার্কিন ডলার।

এছাড়া মোংলা, ঈশ্বরদী ও উত্তরা ইপিজেডে ৭২ হাজার ৬০০ বর্গমিটার স্পেস তৈরি করা হবে। প্রতি বর্গমিটারে ১ দশমিক ৭৫ ডলার মাসে ভাড়া আসবে। ফলে এ খাতে আয় হবে ১ লাখ ২৭ হাজার ৫০ মার্কিন ডলার। সরকারি খাতে উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন, প্রক্রিয়াকরণ, অনুমোদন পদ্ধতি অনুসরণ করে বেপজার নিজস্ব অর্থায়নে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে প্রায় ১৪ হাজার বাংলাদেশি নাগরিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।

বেপজার তরফে আরও জানা যায়, নির্মিত কারখানা ভবনে ফ্লোর স্পেস বরাদ্দ নিয়ে অল্প সময়ের মধ্যেই উৎপাদন শুরু করা সম্ভব। কেননা বিনিয়োগকারীরা তাৎক্ষণিকভাবে কাজ শুরু করতে আগ্রহী। বর্তমানে বেপজা নির্মিত কোনো কারখানা ভবনে ফ্লোর স্পেস খালি নেই।