বাজারে তরমুজ এখন সহজলভ্য। অন্যান্য যে কোনো ফলের চেয়ে তরমুজের কদর অনেক বেশি। শুধু স্বাদে নয়, এর আছে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতাও।
তরমুজে থাকে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি ১ ও বি ৬, ভিটামিন সি, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফাইবার, আয়রন, ক্যালসিয়াম, লাইকোপেন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট।
তরমুজ লাল হওয়ার কারণ হলো এতে উপস্থিতির লাইকোপেন। তরমুজে থাকা উপাদান লাইকোপেন মানবদেহের কয়েক ধরনের ক্যানসারের বিরুদ্ধে খুব ভালো কাজ করে।
গবেষণায় দেখা গেছে, তরমুজে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায় আর উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। তরমুজের ক্যালোরি ও ফ্যাটের পরিমাণ একেবারেই কম। এর সঙ্গে আছে প্রচুর পরিমাণে পানি।
এতো উপকার থাকা স্বত্ত্বেও স্বাদে মিষ্টি হওয়ার কারণে অনেক ডায়াবেটিস রোগীই তরমুজ খেতে ভয় পান। আসলে কোন কোন খাবার খেলে রক্তে শর্করা কতটা বাড়ে, তা নির্ভর করে খাবারের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ও গ্লাইসেমিক লোডের উপর।
গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ৭০ এর বেশি হলে তা উচ্চ মাত্রা, ৫৫ এর নিচে হলে কম মাত্রার। গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যত বেশি হবে তা রক্তে শর্করার পরিমাণও তত বাড়াবে।
তরমুজেরও গ্লাইসেমিক ইনডেক্স অনেক বেশি অর্থাৎ ৭০ এর উপরে থাকে। তবে এতে থাকা প্রচুর জলীয় অংশ কিন্তু গরমে শরীরে পানিশূন্যতা পূরণ করে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মৌসুমে ফল খেতে চাইলে অন্যান্য শর্করার পরিমাণ কমিয়ে দিতে হবে। এক্ষেত্রে ভাত বা মূল খাবার খাওয়ার পরপরই ফল খাওয়া উচিত নয়। অর্থাৎ শর্করা গ্রহণের সময়টা সারাদিনে ভাগ করে নিন।
একই সঙ্গে একাধিক ফলও অনেক পরিমাণে খাবেন না। প্রায় ২৮৬ গ্রাম মাঝারি আকারের তরমুজে ১৭.৭ গ্রাম চিনি থাকে। এক কাপ তরমুজ খেলে প্রায় ৯.৫ গ্রাম চিনি শরীরে প্রবেশ করে।
খাবার বা স্ন্যাকসে তরমুজ বা অন্যান্য ফল যোগ করার পাশাপাশি পুষ্টিকর ফ্যাট ও প্রোটিনের সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রাখা উচিত। ফ্যাট ও প্রোটিন রক্ত প্রবাহে চিনির শোষণকে ধীর করতে সাহায্য করে। এটি টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের জন্য সহায়ক হতে পারে।
অন্যান্য ফলের মতো, তরমুজ খাওয়া ভালো তবে পরিমাণে কম খেতে হবে। ডায়াবিটিক রোগীরা সালাদের সঙ্গে সামান্য তরমুজ মেশাতে পারেন।
তবে তরমুজ খাওয়ার আগে বা পরে উচ্চ জিআইযুক্ত খাবার না খাওয়াই ভালো বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। বরং বাদাম, বীজ ও অন্যান্য পুষ্টিকর খাবারের সঙ্গে খাওয়া ভালো।
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সুষম ও পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। প্রচুর পরিমাণে ফল ও শাকসবজিও রাখতে হবে পাতে। যদিও সব ফলেই কমবেশি প্রাকৃতিক শর্করা থাকে।
তবুও ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তিরা অবশ্যই পরিমাপ মেপে খাবেন। জিআই স্কোরে ফলের অবস্থান সম্পর্কেও সচেতন হওয়া উচিত।