পাকিস্তানের হিন্দুকুশ অঞ্চলে ৬ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এতে এখন পর্যন্ত ৯ জন নিহত ও আরও অন্তত ১৬০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার (২১ মার্চ) এ ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানে বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের আবহাওয়া বিভাগ (পিএমডি)।
ভূ-কম্পন অনুভূত হয়েছে ইসলামাবাদ, লাহার, রাওয়ালপিন্ডি, কুয়েত্তা, পেশওয়ারসহ আরও বেশ কয়েকটি প্রদেশে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল আফগানিস্তানের শহর জুরম থেকে ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব দিকে, পাকিস্তান ও তাজিকিস্তান সীমান্তের নিকটবর্তী এলাকায়।
সন্ধ্যার দিকে ৬ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পের আঘাতের পর আবারও আফটারশক হয়। আফটারশকে ভূ-কম্পনের মাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৭।
এএফপি স্থানীয়দের বরাত দিয়ে বলছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পাকিস্তানে আঘাত হানা এ ভূমিকম্পের স্থায়ীত্ব ছিল ৩০ সেকেন্ড।
আরও পড়ুন> আল-জাজিরার বিশ্লেষণ/ভয়াবহ ভূমিকম্প সামলাতে কতটা প্রস্তুত ইস্তাম্বুল?
খাইবার পাখতুনখোয়ার প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ছাদ, প্রাচীর ও বাড়ি ধসের ঘটনায় ২ জন মারা গেছে সেখানে এবং ছয়জন আহত হয়েছেন। প্রদেশে আটটি বাড়ি আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এ ছাড়া আরও অন্যান্য প্রদেশে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। ধসে পড়েছে ঘরবাড়িসহ নানা স্থাপনা।
ভূমিকম্পের পর প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে যে কোনো জরুরি অবস্থা মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।
ভারতের নয়াদিল্লি ও কাশ্মীরেও কম্পন অনুভূত হয়েছে। আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলেও অনুভূত হয় এ ভূ-কম্পন।
এই উপমহাদেশের সিংহভাগ ভারতীয় টেকটনিক প্লেট ও ইন্দো-অস্ট্রেলীয় প্লেটের মধ্যে একটি সংযোগ প্লেটের ওপর অবস্থিত। দক্ষিণ এশিয়ার বৃহৎ অংশটি ভূমিকম্প প্রবণ বলে পূর্বাভাস মিলছে।
এর আগে গত ২৯ জানুয়ারি ৬ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্প হয় ইসলামাবাদে এবং ১৯ জানুয়ারি খাইবার পাখতুনখোয়ার কয়েকটি জেলায় ৫ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে।
গত বছর আফগানিস্তানে ৬ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে এবং দেশটিতে মারা যায় এক হাজারের বেশি মানুষ।
আরও পড়ুন> আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে হাজার ছাড়ালো মৃতের সংখ্যা
২০০৫ সালের অক্টোবরে খাইবার পাখতুনখোয়া, ইসলামাবাদ ও জম্মু-কাশ্মীরে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে নারী-শিশুসহ মারা যায় অন্তত ১ লাখ মানুষ।