বাজারে যে দামে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে তা অযৌক্তিক বলে জানিয়েছে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সংস্থাটি জানিয়েছে, এখন প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন খরচ করপোরেট প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা। আর প্রান্তিক খামারি পর্যায়ে খরচ ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। আর বাজারে তা ২০০ টাকা কেজির বেশি বিক্রি হওয়া অযৌক্তিক।
ভোক্তা অধিদপ্তর জানায়, বর্তমানে ব্রয়লার মুরগি উৎপাদন খরচের চেয়ে দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে।
রোববার (১৯ মার্চ) জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর থেকে বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষকে আনুষ্ঠানিকভাবে দেওয়া প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
গত ৯ মার্চ পোলট্রিশিল্পের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান সভা করেন। সেই সভার মতামতের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। মুরগির বাজারের বর্তমান অবস্থার ওপর দেওয়া এ প্রতিবেদনে আটটি সুপারিশও তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনটিতে ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, মুরগির খাবারসহ অন্যান্য সব ব্যয় বৃদ্ধির পরও এক কেজি ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন ব্যয় করপোরেট প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা। অন্যদিকে প্রান্তিক খামারি পর্যায়ে খরচ ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। তাতে বর্তমান উৎপাদন খরচ অনুযায়ী প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম সর্বোচ্চ ২০০ টাকা হতে পারে।
বাজারে মুরগির দাম এখন আসলেই কত হওয়া উচিত, তা আরও যাচাই-বাছাইয়ের জন্য বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনকে অনুরোধ করেছে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। একই সঙ্গে সরকারের আরেক প্রতিষ্ঠান প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও পোলট্রিশিল্পের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে মুরগির দাম নির্ধারণের উদ্যোগ নেওয়ার সুপারিশ করেছে সংস্থাটি।
মুরগির দাম যৌক্তিক পর্যায়ে রাখতে ভোক্তা অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে যেসব সুপারিশ করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে পোলট্রির খাবার ও মুরগির বাজারে অত্যধিক মূল্যবৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধান, দোকান ও বাজারে প্রতিদিনের মূল্যতালিকা প্রদর্শন, কোনো বাজারে মূল্যতালিকা না টাঙানো হলে সেই বাজারের কমিটি বিলুপ্তি, অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা ও রোজা উপলক্ষে পোলট্রি বাজারে স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে ভোক্তা অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দপ্তর-সংস্থার সমন্বয় করে দেশব্যাপী নিবিড়ভাবে বাজার তদারকি ও অভিযান পরিচালনা করা।
এদিকে সোমবার (২০ মার্চ) প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ২৮০ থেকে ২৯০ টাকা পর্যন্ত। বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ কম থাকায় এমনিতেই মুরগির সংকট। তার ওপর গত দুদিনে বৃষ্টিতে সরবরাহ আরও কমেছে। এ কারণে বাজারে দাম বেড়ে গেছে। তবে এক্ষেত্রে করপোরেট কোম্পানিগুলোর বাজার নিয়ন্ত্রণের বিষয়টিও তাদের কথায় উঠে আসে।