শরীরের গুরুত্বপূর্ণ এক অঙ্গ হলো লিভার। এটি পাকস্থলীর ঠিক উপরে থাকে, যা খাবার হজমে সাহায্য করে। অনেকেই হয়তো জানেন না, এই অঙ্গ শরীরে স্বাস্থ্যকর কোলেস্টেরল তৈরি করে, যা খারাপ কোলেস্টেরলকে দূর করে। এ কারণে লিভার সুস্থ রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

লিভারের বিভিন্ন ধরনের রোগের মধ্যে অন্যতম হলো হেপাটাইটিস বি। হেপাটাইটিস একটি ভাইরাল সংক্রমণ, যার অনেক ধরন আছে। এক্ষেত্রে লিভারের টিস্যুতে প্রদাহের সৃষ্টি হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) এর তথ্যমতে, হেপাটাইটিস বি ভাইরাস এর অন্যান্য ধরনের চেয়ে সবচেয়ে বেশি বিপজ্জনক। এমনকি এটি মারাত্মকও হতে পারে। এটি লিভারকে এতোটাই নষ্ট করে যে অঙ্গটি ব্যর্থ হয়েও যেতে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, হেপাটাইটিস বি আক্রান্ত বেশিরভাগ লোক যখন শুরু হয় তখন তাদের কোনো লক্ষণ দেখা দেয় না। ফলে এটি ধরা খুব কঠিন হয়ে পড়ে।

এই ভাইরাস লিভার সিরোসিস ও লিভার ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর লক্ষণগুলো প্রকাশ পেতে ৩০-১৮০ দিন সময় লাগতে পারে। আর ততদিনে রোগটি লিভারের কার্যকারিতা নষ্ট করে দিতে শুরু করে ও ভাইরাস বংশবৃদ্ধি করে।

হেপাটাইটিস বি এর লক্ষণ কী কী?

>> ত্বক হলুদ হয়ে যাওয়া
>> হলুদ চোখ
>> প্রস্রাবের রং পরিবর্তন
>> ক্লান্তি
>> বমি বমি ভাব
>> বমি
>> পেটে ব্যথা ইত্যাদি।

হেপাটাইটিস বি প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা না করা হলে কিছু লোকের মধ্যে গুরুতর লিভার ফেইলিওর হতে পারে। এই সমস্যা এতোটাই মারাত্মক যে ভাইরাস লিভারে বংশবৃদ্ধি করার সঙ্গে সঙ্গে এর কারণে কয়েক দিন বা সপ্তাহের মধ্যে লিভার পুরোপুরি কাজ করা বন্ধ করে দেয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, প্রসবের সময় একজন নারীর থেকে তার শিশুর মধ্যে হেপাটাইটিস বি সংক্রমণ খুব সহজ। একই সময়ে, ৫ বছর বয়সী শিশুরাও বেশি ঝুঁকিতে থাকে।

হেপাটাইটিস বি প্রতিরোধ ও চিকিৎসা কী?

এই যকৃতের রোগ প্রতিরোধের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, প্রতিটি নবজাতককে হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিন দেওয়া জরুরি।

একবার এই ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করলে তা ধ্বংস করা সম্ভব নয় ও এই রোগ পুরোপুরি সারানো যায় না। তবে জীবনধারণে পরিবর্তন ও অ্যান্টি ভাইরাল ওষুধ দিয়ে রোগের লক্ষণগুলো কমানোর চিকিৎসা করেন চিকিৎসকরা।