ডিম একটি সুপারফুড হিসেবে বিবেচিত হয়। শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি উপাদান আছে ডিমে। তবে ডিম নিয়ে অনেকের মনেই নানা ধরনের প্রশ্ন আছে যেমন- ডিমের সাদা বা হলুদ অংশ কোনটি খাওয়া উচিত, সেদ্ধ না ভাজা, কখন ও কীভাবে খেতে হবে, দিনে কয়টি ডিম খাওয়া যাবে, ডিম খেলে কি কি উপকার পাওয়া যায় ইত্যাদি?
ডিমের স্বাস্থ্যগুণ নিয়ে ভারতের বিএইচএমএসের প্রতিষ্ঠাতা, পুষ্টিবিদ ও ডায়েটিশিয়ান ডা. স্মৃতি ঝুনঝুনওয়ালার মতে, ডিম একটি সুপারফুড।
এতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ৯টি প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড (প্রোটিনের বিল্ডিং ব্লক) আছে, যা শরীর নিজে থেকে তৈরি করতে পারে না।
পুষ্টিবিদের মতে, ডিমের প্রোটিনকে বলা হয় ‘উচ্চ মানের প্রোটিন’। একটি সম্পূর্ণ ডিমে প্রায় ৬.৩ গ্রাম প্রোটিনের পাশাপাশি বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ থাকে।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সুপারফুড
সবচেয়ে বড় কথা হলো, কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্সযুক্ত খাবারের তালিকায় ডিম অন্যতম। এর অর্থ হলো, ডিম রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়ায় না। এ কারণেই ডিম ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সবচেয়ে ভালো খাবার।
খারাপ কোলেস্টেরল থেকে মুক্তি পায়
ডিমের কুসুমে ফ্যাট ও কোলেস্টেরল থাকে। এ কারণে অনেকেরই ভুল ধারণা আছে যে, ডিমের কুসুম খেলে ওজন ও কোলেস্টেরল বেড়ে যায়। আসলে কুসুমে লিপিড স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ বেশি।
এতে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। যা ভালো কোলেস্টেরল বাড়াতে ও কম ঘনত্বের লাইপোপ্রোটিন (খারাপ কোলেস্টেরল) কমাতে দেখা গেছে।
এই কোলেস্টেরল টেস্টোস্টেরন উৎপাদনের জন্যও প্রয়োজন, যা পেশি তৈরি করতে ও শক্তির মাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
ওজন কমাতে সাহায্য করে
ডিম ওজন কমাতে সহায়ক কারণ এতে প্রোটিন পাওয়া যায়, যা আপনার পেট দীর্ঘক্ষণ ভরা রাখতে সাহায্য করে। একটি ডিমে ৮০-১০০ ক্যালোরি থাকে। ডিম ওজন কমাতে সাহায্য করে, তবে পেটের চর্বি কমায় এমন কোনো প্রমাণ নেই।
দিনে কয়টা ডিম খাবেন?
ডিম খাওয়ার সর্বোত্তম সময় হলো সকালের নাস্তায়। উচ্চ চর্বি ও প্রোটিন গ্রহণের কারণে সারাদিন উদ্যমী থাকা যায়, আবার মেটাবলিজম বাড়াতেও কাজ করে। একজন সুস্থ মানুষের সকালের নাস্তায় ২টি ডিম খাওয়া উচিত।
কীভাবে ডিম খাবেন?
ডায়েটে ডিম অন্তর্ভুক্ত করার সর্বোত্তম উপায় হলো অমলেট, সেদ্ধ বা স্ক্র্যাম্বল করা। আপনি যদি ওজন কমানোর চেষ্টা করেন তাহলে এই পদ্ধতিতেই ডিম খেতে পারেন। আবার ডিমের বিভিন্ন পদও তৈরি করতে পারেন।
ব্রোকলি, কেল, পালং শাকের মতো লো-কার্ব সবজির সঙ্গে ডিম খেলে বেশি উপকার পাবেন। তবে ডিম রান্না করার সময় তেল কম ব্যবহার করুন। বেশি সেদ্ধ করবেন না, এতে পুষ্টিগুণ কমে যেতে পারে।