কান পরিষ্কার করতে অনেকেই কটনবাড ব্যবহার করেন। তবে আদৌ কি কান পরিষ্কার করা উচিত? কিংবা কান পরিষ্কারে কটনবাড ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা কতটুকু? এসব বিষয়ে অনেকেরই সঠিক ধারণা নেই।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কান শরীরের গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। শরীরের ভারসাম্য রক্ষা ও কথা শুনতে সাহায্য করে এই অঙ্গ। তবে কানের যত্ন না নিলে কিংবা দুর্ভাগ্যবশত নানা অঘটনে কানে নানা জটিলতা দেখা দেয়।
আরও পড়ুন: কান দেখেই বুঝে নিন শরীর সুস্থ আছে কি না
বেশিরভাগ মানুষই অভ্যাসবশত বা অস্বস্তির কারণে কান পরিষ্কারের তাগিদ অনুভব করেন। এছাড়া কানে খোল তো জমেই। তাই এমন পরিস্থিতিতে কী করা উচিত, তা অনেকেই বুঝে উঠতে পারেন না। এরই ফলে কানে কটনবাড ব্যবহারে ভুল করেন।
কান পরিষ্কারের গুরুত্ব কতটুকু ও কটনবাড ব্যবহারের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জানিয়েছেন কলকাতার কেপিসি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ইএনটি বিভাগের প্রধান ডা. দ্বৈপায়ন মুখোপাধ্যায়।
তার মতে, কান পরিষ্কারের কোনো প্রয়োজনই হয় না। কানের নিজস্ব সুরক্ষাপদ্ধতি আছে। এ কারণে ভেতরে ময়লা জমলেও তা নিজ থেকেই একসময় বেরিয়ে আসে।
আরও পড়ুন: ঠান্ডায় কানে তালা লাগলে দ্রুত যা করবেন
কানের ভেতরে যে তরল বা ওয়াক্স জমে সেটি অনেকটা জেলির মতো। এটিও নিজের মতো করে বাইরে বেরিয়ে আসে একসময়। তাই অহেতুক কানে হাত দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। এতে উপকার নয় বরং ক্ষতি হয় কানের।
কটনবাড ব্যবহারের বিষয় সতর্ক করে এই বিশেষজ্ঞ জানান, দেখা গেছে কটনবাড ব্যবহারের কারণে কানে সংক্রমণ ঘটে। সেখান থেকে ব্যথা, পুঁজ ইত্যাদি জটিলতা তৈরি হতে পারে।
এছাড়া কটনবাডস ব্যবহারের সময় অসাবধানতার কারণে অনেকের কানের পর্দায় আঘাত লাগে, ফলে কানে শুনতে সমস্যা হয়।
আরও পড়ুন: কান দেখেই চিনে নিন কে কেমন!
আবার অনেকের কানের ভেতরে তুলা আটকে যায়, পরে তা বের করতে আবার দৌড়াতে হয় ইএনটি বিশেষজ্ঞের কাছে।
বিশেষজ্ঞের মতে, কানের ওয়াক্স নিজ থেকেই বেরিয়ে আসে। তবে কোনো ইনফেকশন হলে বা অন্য কোনো গঠনগত কারণে কানে ময়লা জমতে পারে। যাকে বলা হয় খোল। এক্ষেত্রে খোল কিন্তু অনেক শক্ত হতে পারে।
আরও পড়ুন: পার্লারে নাক-কান ফোঁড়ালে হেপাটাইটিসের ঝুঁকি আছে
এমন ক্ষেত্রে সতর্ক হতে হবে ও দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এক্ষেত্রে প্রথমে দেওয়া হয় ড্রপ। তার ৫-৭ দিন বাদে পরিষ্কার করে দেওয়া হয় স্যালাইন ওয়াটার দিয়ে।
এছাড়া কানে ব্যথা হলে বা পুঁজ, রক্ত বের হলে কিংবা আঘাত লাগলে তা অবহেলা করা উচিত নয়। বরং দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।