গরম আবহাওয়ায় ঘাম হওয়া স্বাভাবিক। তবে শীতেও অতিরিক্ত ঘাম কিন্তু গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে। বিভিন্ন রোগের লক্ষণ হিসেবেও প্রচণ্ড ঘাম হতে পারে। আবার হঠাৎ ঘেমে ওঠা হার্ট অ্যাটাকেরও ইঙ্গিত হতে পারে। তাই ঘামকে সাধারণভাবে নেওয়াও উচিত নয়।

জানলে অবাক হবেন, ডায়াবেটিস হঠাৎ কমে গেলেও প্রচণ্ড ঘাম হতে পারে রোগীর। এ সময় শরীরে অস্বস্তিভাবের সৃষ্টি হয়। আসলে রক্তে শর্কারার পরিমাণ অত্যধিক কমে যাওয়ার কারণে এমনটি ঘটে।

ডায়াবেটিস এখন প্রায় প্রতিটি ঘরে ঘরেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান অনুসারে, বিশ্বে ৪২২ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। এর পাশাপাশি প্রতি বছর প্রায় ১৫ লাখ মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ডায়াবেটিসের কারণে মারা যায়।

যদিও অতিরিক্ত ঘাম হওয়া ডায়াবেটিসের লক্ষণের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত নয়, তবে ডায়াবেটিসের কারণেও অনেকের মধ্যে ঘামের সমস্যা দেখা যায়। আসলে ডায়াবেটিস হলে শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় রাখার ক্ষমতা প্রভাবিত হয়।

এ কারণে আক্রান্তদের বারবার মাথা ঘোরা হয় ও রাতেও ঘাম হতে পারে। এই লক্ষণে বুঝবেন আপনার ডায়াবেটিস বেড়েছে।

ভেরি ওয়েল হেলথ ওয়েবসাইটের তথ্য অনুসারে, রক্তে শর্করার ভারসাম্য না থাকলে অতিরিক্ত ঘাম হয়। যদিও প্রতিটি মানুষ ঘামেন, তবে ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথির কারণে পা বা উরুতে বেশি ঘাম হয়।

এক গবেষণায় দেখা গেছে, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত প্রায় ৮৪ শতাংশ মানুষ অতিরিক্ত ঘামেন। বিশেষ করে ঘাড়ের নিচে। এর প্রধান কারণ হলো রক্তে শর্করার পরিমাণ হঠাৎ কমে যাওয়া।

আসলে ডায়াবেটিস রোগীরা রক্তে শর্করা কমাতে ওষুধ খান। ফলে চিনির শোষণ খুব দ্রুত শুরু হয়। অন্যদিকে ডায়াবেটিসের কারণে তারা মিষ্টি খাওয়া একেবারেই বন্ধ করে দেয়।

ফলে দ্রুত শরীরে চিনি বা গ্লুকোজের ঘাটতি দেখা দেয়। গ্লুকোজের ঘাটতি হলে শরীরে বেশি ঘাম হয়। তবে খাওয়া-দাওয়ার পর যখন চিনির মাত্রা কিছুটা বেড়ে যায়, তখন পরিস্থিতি আবার ঠিক হয়ে যায়।

কীভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করবেন?

রাতে অতিরিক্ত ঘাম হওয়ার অর্থ হলো সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে নেই। এ কারণে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করতে হবে।

সবার আগে ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ডায়েট পরিবর্তন করে এটি সহজেই করা যায়। ব্যায়াম এমন একটি কার্যকলাপ যা শুধু ডায়াবেটিস নয় হৃদরোগ, স্ট্রোক এমনকি ক্যানসারের ঝুঁকিও কমাতে পারে।

খাদ্যতালিকায় নিয়মিত শাক, সবুজ শাকসবজি অন্তর্ভুক্ত করুন। যতটা সম্ভব ফাইবার সমৃদ্ধ শাকসবজি খান। স্ট্রবেরি, বেরি, লেটুস, বাঁধাকপি, গাজর, সেলারি ইত্যাদি খাওয়া ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে পারে।