জরুরি পণ্য আমদানির জন্য বৈদেশিক মুদ্রাবাজার পরিস্থিতি ঠিক রাখতে ডলার বিক্রি অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে মোট ছয় কোটি ৪০ লাখ ডলার বিক্রি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ নিয়ে চলতি অর্থবছরে বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে ৯৬৭ কোটি ডলার বিক্রি করা হয়েছে।
এর আগে এত কম সময়ে কখনো এত ডলার বিক্রির প্রয়োজন হয়নি। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ৬০ বিলিয়ন ডলারে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) ৯২০ কোটি বা ৯ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে কখনো এত পরিমাণ ডলার বিক্রির প্রয়োজন হয়নি। অন্যান্য বছরে বিভিন্ন ব্যাংকের কাছ থেকে ডলার কিনে সংগ্রহ রেখেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। গত অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে বিক্রি করেছিল ৭৬২ কোটি ডলার।
আরও পড়ুন: ইতিবাচক ধারায় প্রবাসী আয়
এভাবে ডলার বিক্রির ফলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে ৩২ দশমিক ৬০ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের আলোকে হিসাব করলে রিজার্ভ এখন ২৪ বিলিয়নের কিছু বেশি। গত বছরের এ সময়ে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৪৫ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ এক বছরে কমেছে ১২ দশমিক ৭৯ বিলিয়ন ডলার।
তবে সুখবর দিচ্ছে রপ্তানি ও রেমিট্যান্স। এ দুই ধারা এখন ইতিবাচক। এর বিপরীতে নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থার কারণে আমদানি কমছে। চলতি অর্থবছরের জানুয়ারি পর্যন্ত সাত মাসে তিন হাজার ২৪৫ কোটি ডলারের রপ্তানি আয় হয়েছে, যা প্রতি মাসে গড়ে ৪৬৪ কোটি ডলারের রপ্তানি আয় হয়েছে। নভেম্বর, ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে গড়ে ৫২০ কোটি ডলার রপ্তানি হয়েছে।
আরও পড়ুন: বছরের শুরুর মাসেই রেমিট্যান্সে সুবাতাস, এলো ১৯৫ কোটি ডলার
একই সময়ে বেড়েছে রেমিট্যান্স। জানুয়ারিতে প্রবাসী আয় বেড়েছে। এ মাসে দেশে এসেছে ১৯৬ কোটি ডলারে। আগের মাস ডিসেম্বরে এটি ছিল প্রায় ১৭০ কোটি ডলার। আর চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম ১০ দিনে ৬৪ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। ফলে ফেব্রুয়ারি মাসেও রেমিট্যান্স বাড়বে এমনটা বলছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা।
আমদানি কমাতে শতভাগ পর্যন্ত এলসি মার্জিন, বিলাসীপণ্য আমদানিতে কড়াকড়ি আরোপসহ বিভিন্ন উদ্যোগের মধ্যে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয়মাসে আমদানি ব্যয় ২ দশমিক ১৫ শতাংশ কমে তিন হাজার ৮১৩ কোটি ডলারে নেমেছে। এসবকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।