তুরস্ক-সিরিয়ার সীমান্ত অঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্পের এক সপ্তাহ পর ধ্বংসস্তূপ থেকে আরও ৯ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) তাদের উদ্ধার করা হয়। এ পর্যন্ত দেশ দুটিতে ভয়াবহ এই দুর্যোগে ৪১ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত দেশ দুটিতে উদ্ধার তৎপরতা প্রায় শেষের দিকে চলে এসেছে। যদিও ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়া লোকজনের বেঁচে ফেরার সম্ভাবনা ক্ষীণ। তবুও বৈরি আবহাওয়ার মধ্যেও উদ্ধার কাজ চালাচ্ছেন বিভিন্ন দেশের উদ্ধারকারী টিমের সদস্যরা।

দেশ দুটিতে চরম মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। সেকারণে এখন জরুরি সহায়তার দিকে মনোযোগী সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো।

আরও পড়ুন> আল-জাজিরার বিশ্লেষণ/ভয়াবহ ভূমিকম্প সামলাতে কতটা প্রস্তুত ইস্তাম্বুল?

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান গত ৬ ফেব্রুয়ারি ভোরের দিকে আঘাত হানা ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর প্রথমবার এক প্রতিক্রিয়ায় সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন। তবে তিনি সার্বিক পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলেও জানান।

আঙ্কারায় টেলিভিশনে দেওয়া এক বক্তব্যে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেন, ‘আমরা শুধু আমাদের দেশেই নয়, মানবতার ইতিহাসেও সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হয়েছি।’

মঙ্গলবার সবশেষ যাদের উদ্ধার করা হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন কাহরামানমারাস প্রদেশের ১৭ ও ২১ বছর বয়সী দুই ভাই। অন্যদিকে সিরিয়ীয় একজন পুরুষ ও একজন তরুণীকে উদ্ধার করা হয়েছে। এক উদ্ধারকারী জানিয়েছেন, ধ্বংসস্তূপে আরও কিছু মানুষ বেঁচে থাকতে পারেন।

তবে জাতিসংঘ বলছে, উদ্ধার পর্ব শেষ হয়ে আসছে। এখন আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা লোকজনের খাদ্যসহ অন্যান্য জরুরি সহায়তা প্রয়োজন।

আরও পড়ুন> শেষ হতে চলেছে তুরস্ক-সিরিয়ার ভূমিকম্পের উদ্ধার পর্ব

তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় শহর গাজিয়ানতেপের একটি খেলার মাঠে আশ্রয় নিয়েছেন অনেকে। হাসান সাইমোয়া নামে এক শরণার্থী বলেন, ‘মানুষ অনেক কষ্ট পাচ্ছে। আমরা একটি তাঁবু বা অন্য কিছু পাওয়ার জন্য আবেদন করেছি, কিন্তু এখন পর্যন্ত কিছুই পাইনি।’

ভূমিকম্পের ফলে সাইমোয়াসহ খোলা মাঠে আশ্রয় নেওয়া মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। তারা খেলার মাঠে প্লাস্টিক, কম্বল এবং কার্ডবোর্ড ব্যবহার করে তাঁবু গেড়ে থাকছেন।

এদিকে ইউরোপবিষয়ক বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিচালক হ্যান্স হেনরি পি. ক্লুজ বলেন, ‘উভয় দেশের ২ কোটি ৬০ লাখ মানুষের মানবিক সহায়তা জরুরি হয়ে পড়েছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাদের চাহিদা বাড়ছে। বৈরি আবহাওয়ার মধ্যে তাদের জরুরিভিত্তিতে খাদ্য, স্যানিটারি ও রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা করা দরকার।’