ওমিক্রনের নতুন সাব ভ্যারিয়েন্ট বিএফ.৭ এখন সারাবিশ্বে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে করোনার এই নতুন উপধরন।
ওমিক্রন বিএফ.৭ সাব ভ্যারিয়েন্ট সংক্রমণের কারণে চীনের বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীদের ভিড় বেড়েছে। বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, এই ভাইরাসের কারণে আগামী কয়েক মাসে চীনে লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু ঘটতে পারে।
কোভিডে আক্রান্তদের মধ্যে যে ৩ লক্ষণ বেশি দেখা যাচ্ছে
করোনার অন্যান্য উপধরনের তুলনায় ওমিক্রনের এই উপধরনের ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতা বেশি। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন এই ভাইরাসে সংক্রমিত ব্যক্তি একসঙ্গে ১৮ জনের মধ্য সংক্রমণ ছড়াতে পারে।
এখন পর্যন্ত এটি এমন মানুষদের প্রভাবিত করছে যারা কোভিড-১৯ টিকা নেননি কিংবা দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার অধিকারী যেমন- শিশু, বয়স্ক, গর্ভবতী নারী বা নানা অসুস্থতায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা।
টিকা দেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে সংক্রমণের হার কিছু কম এমনকি লক্ষণগুলো তেমন গুরুতরভাবে প্রকাশ পাচ্ছে না।
কাঁধে-পায়ে ভীষণ যন্ত্রণা, ওমিক্রন বিএফ.৭ এর লক্ষণ নয় তো?
ওমিক্রন বিএফ.৭ কতটা মারাত্মক?
এ বিষয়ে ভারতের গজিয়াবাদের মনিপাল হাসপাতালের ইন্টারনাল মেডিসিন কনসালটেন্ট ডা. দীপক ভার্মা জানান, নতুন ওমিনক্রন বিএফ.৭ ভাইরাস এখন পর্যন্ত কোভিডের সবচেয়ে বিপজ্জনক রূপগুলোর মধ্যে একটি বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই উপধরনের লক্ষণগুলো আগের কোভিড সংক্রমণের মতোই। যেমন- জ্বর, কাশি, গলা ব্যথা, দুর্বলতা, বমি বমি ভাব ও ডায়রিয়া। একই সঙ্গে কাশি বা গলা ব্যথার লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
একসঙ্গে ১৮ জনকে আক্রান্ত করে ওমিক্রন বিএফ৭, জানুন এর লক্ষণ
সাধারণ কাশি নাকি কোভিডে আক্রান্ত বুঝবেন কীভাবে?
কাশির ধরন
বেশিরভাগ কোভিড রোগী শুকনো কাশিতে ভোগেন। এটি হালকাভাবে শুরু হলেও দিন দিন গুরুতরভাবে প্রকাশ পায়। যেমন- বুকে শক্তভাব, শ্বাস নিতে অসুবিধা ইত্যাদি লক্ষণ।
এ সময় যারা কাশিতে ভুগছেন ও তা সারছে না তাহলে কোভিড পরীক্ষা করুন। ফলাফল পজেটিভ আসলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন ও সতর্ক থাকুন।
ক্লান্তি
সাধারণ কাশি হলে শরীরে তীব্র ক্লান্তি ও দুর্বলতা সৃষ্টি হয় না। কোভিড সংক্রমণের কারণে শরীরে দুর্বলতার সৃষ্টি হয়, এর কারণ হলো করোনা ভাইরাস শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করে দেয়।
তাই কাশির সঙ্গে শরীরে দুর্বলতা দেখা দিলে সতর্ক হয়ে যান। কোভিড কাশি রাতে বেড়ে যায়, ফলে ঘুমানো কষ্টকর হয়ে ওঠে।
এক ভ্যাকসিন নেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে কোভিডের যে লক্ষণ দেখা দিচ্ছে!
সর্দি-জ্বর
কাশির সঙ্গে যদি আপনি সর্দি-জ্বরে ভোগেন তাহলে সতর্ক হয়ে যান। এর সঙ্গে গলা ব্যথা, নাক দিয়ে পানি পড়া, অতিরিক্ত কাশি, হালকা থেকে মাঝারি জ্বর ও শ্বাসকষ্ট দেখা দিতে পারে।
এই লক্ষণগুলো প্রথমে হালকাভাবে প্রকাশ পেলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা আরও খারাপ হয়। কোভিডে সংক্রমিত ব্যক্তির ফুসফুসে আস্তরণ পড়ে, ফলে ফুসফুসের কার্যকারিতা কমে যায়।
মুখের ভেতরে ঘা হয়েছে, ওরাল ক্যানসারের লক্ষণ নয় তো?
কোভিডে আক্রান্ত হলে অনেকের মধ্যেই উপসর্গ দেখা দেয় না, এর কারণ হতে পারে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো ও করোনা টিকাপ্রাপ্ত। এ কারণে এখন সবারই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা জরুরি। যদিও ওমিক্রনের এই উপধরনে সংক্রমিতদের মধ্যে মৃত্যুঝুঁকি অনেকটাই কম।
তবুও দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার মানুষরা এতে সংক্রমিত হলে গুরুতর উপসর্গ এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই এ সময় সর্দি-কাশি, জ্বর, গলাব্যথার মতো লক্ষণ দেখলে দ্রুত কোভিড টেস্ট করাতে হবে ও অন্যদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।