বিয়ের বেশ কয়েক মাস আগ থেকেই কনেরা রূপচর্চা শুরু করে, যাতে বিয়ের দিন তার দিক থেকে কেউ নজর ফেরাতে না পারেন!

অনেকে নিয়মিত পার্লারে গিয়ে রূপচর্চা করে আবার কেউ কেউ ভরসা রাখেন প্রাকৃতিক উপাদানে। যারা ঘরেই বিয়ের আগে ত্বকের যত্ন নিচ্ছেন, তারা ব্যবহার করতে পারেন ঘি।

অবাক করা বিষয় হলেও সত্যিই যে, ঘি দিয়েও ত্বকের যত্ন নেওয়া যায়। ত্বকের হারানো উজ্জ্বলতা ফিরে পেতে এমনকি আর্দ্রতা জোগাতে রান্নাঘরের এই উপাদান খুবই কার্যকরী।

ত্বকের জন্য ঘি কেন উপকারী?

২০১৯-২০২০ সালের গবেষণা থেকে জানা গেছে, ঘি’তে অপরিহার্য শর্ট-চেইন ফ্যাটি অ্যাসিডের পাশাপাশি দ্রবণীয় চর্বি ভিটামিন আছে যেমন- বুটিরিক অ্যাসিড, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন এ, বি ১২, ডি, ই ও কে।

ঘি’তে থাকা ওমেগা ফ্যাটি অ্যাসিড ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ত্বকের ফ্রি র্যাডিকেল ধ্বংস করে ও ত্বককে আরও পুষ্ট করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব গুণের জন্য ঘি ত্বকে ব্যবহারের কারণে আর্দ্রতা বাড়ে ও চকচকে ভাব বজায় থাকে।

অ্যান্টি অক্সিডেন্টের কারণে ঘি ত্বকে ব্যবহার করলে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমে ও ত্বকে উজ্জ্বল আভা পড়ে। এজন্য নিয়মিত ঘি রাখুন ডায়েটে ও স্কিনকেয়ার রুটিনে।

ত্বকে ঘি মাখলে আরও যেসব উপকার মিলবে-

ত্বকের শুষ্কতা কমবে

শীতে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ কমে যাওয়ায় ত্বক, মুখ, ঠোঁট এমনকি চুলও শুষ্ক হয়ে ওঠে। এক্ষেত্রে ত্বকের যত্নে ব্যবহার করতে পারেন সামান্য ঘি।

হাত-পা, কনুই ও হাঁটুতে লাগিয়ে হালকা করে মালিশ করে নিতে পারেন ঘি। নিয়মিত ঘি ব্যবহারে ত্বকের শুষ্কতা দূর হবে ও কনের ত্বকের কোমলতা বাড়বে।

ঠোঁট ফাটা রোধ করে

শীতে ঠোঁট ফাটার সমস্যায় কমবেশি সবাই ভোগেন। বিয়ের আগে কনের ঠোঁট যদি অযত্নে ফেটে যায় তাহলে বিয়ের দিন ভারি সাজেও সেই ফাটা লুকানো যাবে না।

তাই এখন থেকেই ঘুমানোর আগে আঙুলে অল্প একটু ঘি ঠোঁটে লাগিয়ে বৃত্তাকার গতিতে মালিশ করুন কয়েক মিনিট। এবার ঘুমিয়ে যান ও পরদিন সকালে ধুয়ে ফেলুন।

ত্বকের আর্দ্রতা জোগায়

শীতে ত্বকের আর্দ্রভাব কমতে থাকে। এ সময় ত্বকের সঠিক যত্ন না নিলে তা শুষ্ক হয়ে উঠতে পারে। এজন্য শীতে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাাখতে কাঁচা দুধের সঙ্গে বেসন ও সামান্য ঘি মিশিয়ে ব্যবহার করুন।

এই মিশ্রণ ত্বকে লাগিয়ে কিছুক্ষণ ম্যাসেজ করে ১৫ মিনিটের মতো রেখে ধুয়ে ফেলুন। ঘি ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে ত্বকে। পাশাপাশি ঘি ত্বকের উজ্জ্বলতাও বাড়ায়।

বলিরেখা দূর করে

ঘিতে থাকা ভিটামিন ই ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। চোখ ও কপালের বলিরেখা ও চোখের ক্লান্তি দূর করে ঘি। নিয়মিত এটি ব্যবহারে ত্বক হয়ে ওঠে আরও কোমল ও টানটান।

পা ফাটা থেকে মেলে মুক্তি

শীত আসতেই পা ও গোড়ালি ফাটার সমস্যায় ভোগেন কমবেশি সবাই। এ সমস্যার সমাধানে প্রতি রাতে ঘুমানোর আগে গোড়ালিতে ঘি মেখে নিন। দেখবেন পা ফাটার সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে।

চুল ও মাথার ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা থেকে বাঁচায় ঘি। চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও ঘি ব্যবহার করতে পারেন। এতে থাকা ভিটামিন এ ও ই চুলকে নরম ও স্বাস্থ্যজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে। ঘিতে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট স্ক্যাল্পের নানা সমস্যাও প্রতিরোধ করে।