বিয়ের আগের দিন বর-কনে উভয়েরই গায়ে হলুদ দেওয়া হয়। বর্তমানে বিয়ের চেয়ে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানই বেশি জাকজমকপূর্ণ হয়। বিয়ের সঙ্গে গায়ে হলুদের প্রথাও জড়িত অতীত থেকেই।

প্রাক-বিবাহ রীতির মধ্যে পড়ে গায়ে হলুদের প্রথা। এদিন বর ও কনের মুখে, ঘাড়ে, হাত-পায়ে একে একে পরিবার, আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুরা একে একে হলুদ লাগান। পুরো অনুষ্ঠানজুড়েই থাকে নাচ-গান’সহ বাহারি আয়োজন।

এর সঙ্গে তো ভরপেট খাওয়ার পর্বও চলে লাগাতার। বর্তমানে নানা আনুষ্ঠানিকতা ও জাকজমকতার মধ্য দিয়ে বিয়ের আগের দিন পালিত হয় এই রীতি।

তবে কেন বিয়ের আগে পালিত হয় গায়ে হলুদের এই রীতি? তা হয়তো অনেকেরই অজানা! চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক এই রীতির পেছনের কিছু সম্ভাব্য কারণ-

ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়

অতীতে যখন বিভিন্ন কসমেটিক ও বিউটি ট্রিটমেন্ট ছিল না, তখন বিয়ের দিন যাতে দম্পতিকে সুন্দর দেখায় তা নিশ্চিত করতে বর-কনেকে মাখানো হত হলুদ।

হলুদে থাকা পুষ্টিগুণ ত্বকে তাৎক্ষণিক উজ্জ্বল আভা দিতে সাহায্য করে। এ কারণেই রূপচর্চায় হলুদ এতোটা জনপ্রিয়।

হলুদ অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল হিসেবে কাজ করে

হলুদে আছে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল গুণ, যা ত্বক ও শরীরের বিভিন্ন ক্ষত থেকে শুরু করে সমস্যার সমাধান করে। হলুদ জীবাণুনাশক হিসেবে কাজ করে।

এটি রোগ প্রতিরোধ শক্তিও বাড়ায় সাহায্য করে। হলুদের এই গুণের জন্যও বর-কনের গায়ে মাখানো হয় এটি। যাতে বিয়ের আগে তাদের শরীরে জীবাণুমুক্ত হয়।

শরীর ও মনকে ভালো রাখে হলুদ

আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞদের মতে, হলুদ শরীর ও মনকে শুদ্ধ করে। বিবাহিত জীবনে দুজন নতুন মানুষকে স্বাগত জানায় হলুদ। বিয়ের আগে হলুদ লাগানোর মধ্য দিয়ে দুজনের মন ও শরীরে সুস্থতা মেলে।

শরীর বিষমুক্ত করে

হলুদে থাকা শক্তিশালী এক্সফোলিয়েটিং অ্যাজেন্ট ত্বককে করে বিষমুক্ত। হলুদের অনুষ্ঠানের পর যখন ত্বক ধুয়ে ফেলা হয়, তখন ত্বকের মৃত কোষ দূর হয় ও উজ্জ্বলতা বাড়ে।

হলুদ স্নায়ুকে শান্ত করে

বিয়ে নিয়ে বর-কনে উভয়ের মধ্যে মানসিক চাপ থাকে। হলুদ মাখানোর মাধ্যমে তাদেরকে চাপ থেকে মুক্ত করা যায়। হলুদ উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে।

হলুদে থাকা কারকিউমিন নামক অ্যান্টি অক্সিডেন্ট অ্যান্টি ডিপ্রেসেন্ট ও মাথাব্যথা উপশম করতে সাহায্য করে। স্নায়ুকে শান্ত করার জন্য ও বিবাহের উদ্বেগ কমাতে দারুন কার্যকর হলুদ।

আশির্বাদস্বরূপ

বিয়ের আগে গায়ে হলুদ দেওয়াকে অনেকেই আশীর্বাদস্বরূপ বলে মনে করেন। গায়ে হলুদ মাখিয়ে আত্মীয়-স্বজনরা হবু বর ও কনেকে সুখী বিবাহিত জীবনের জন্য আশীর্বাদ করেন।