আবারও বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনা। ২০১৪ বিশ্বকাপের পর ফের সেমিফাইনালে উঠলো দলটি। নির্ধারিত সময়ের খেলা ২-২ গোলে সমতায় থেকে শেষ হয়৷ অতিরিক্ত সময়েও গোল না হলে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক মার্টিনেজের দৃঢ়তায় ৪-৩ ব্যবধানের জয়ে সেমিফাইনালে ওঠে আর্জেন্টিনা। নির্ধারিত সময়ের খেলা ২-২ ব্যবধানে সমতায় শেষ হয়।

ম্যাচে দুই পরিবর্তন নিয়ে একাদশ সাজান আর্জেন্টাইন কোচ স্কালোনি। ৪-৩-৩ ফরমেশন থেকে সরে এসে ৩-৫-২ ফরমেশনে এদিন খেলান তিনি।

ডাচদের বিপক্ষে শুরু থেকে বল দখল নেওয়ার চেষ্টা করে। ম্যাচের ১৪ মিনিটে বাম পাশ থেকে আকুনার জোরালো ক্রসে ম্যাকএলিস্টার বল মাথা ছোঁয়াতে পারলে এগিয়ে যেতে পারতো আর্জেন্টিনা।

২৩ মিনিটে আবারও সুযোগ পায় আর্জেন্টিনা। এবার ডি বক্সের বাইরে থেকে মেসি তার নিজস্ব জায়গা থেকে বল পেয়ে দূরপাল্লার শট নিলে বল চলে যায় গোলবারের ওপর দিয়ে। এর ২ মিনিট পরে সুযোগ পেয়েছিল ডাচরাও। কিন্তু বারুইনের শট চলে যায় গোলবারের বাইরে দিয়ে।

৩৪ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে ডি পলের দুর্বল শট রুখে দেন ডাচ গোলরক্ষক। এর ঠিক ১ মিনিট পরেই আসে কাঙ্ক্ষিত সেই গোল। মাঝমাঠ থেকে বল একাই টেনে নিয়ে যান মেসি। ডি বাইরে বাইরে থেকে তিন ডিফেন্ডারের পায়ের মাঝ দিয়ে দর্শনীয় এক পাস দিলে মলিনা সেটিকে কোন রকম কার্পণ্য না করে গোলে পরিণত করেন।

এক গোলে এগিয়ে দুর্বার খেলতে থাকে স্কালোনির দল। ৪১ মিনিটে সুযোগ পেয়েছিলেন মেসিও। কিন্তু ডিবক্সের ভেতর থেকে মেসির ডান পায়ের শট সোজা চলে যায় গোলরক্ষকের হাতে। শেষের দিকে ডাচরা গোলের চেষ্টা করলেও আর গোল পায়নি তারা। ফলে ১-০ গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় আর্জেন্টিনা।

বিরতি থেকে ফিরে আক্রমণের ধার বাড়ায় ডাচরা। ৬৪ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে ফ্রি কিক পায় আর্জেন্টিনা। মেসির বা পায়ের বুলেট গতির শট গোলবারের সামান্য উপর দিয়ে চলে যায়।

৭২ মিনিটে ডি বক্সের ভেতর আকুনাকে ফাউল করলে পেনাল্টি পায় আর্জেন্টিনা। স্পট কিক থেকে পেনাল্টিতে গোল করে দলকে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে দেন লিওনেল মেসি। এবারের বিশ্বকাপে এটি তার ৪র্থ গোল এবং সব মিলিয়ে বিশ্বকাপে এটি তার ১০ম গোল।

দুই গোলে পিছিয়ে থেকেও আক্রমণের ধার কমায়নি নেদারল্যান্ডস। ৮৪ মিনিটে দারুণ এক আক্রমণ থেকে ডাচদের হয়ে হেডে গোল করেন বদল হিসেবে নামা উইঘোর্স্ট।

এক গোল শোধ দিয়ে আরও গোলের জন্য মরিয়া হয়ে খেলতে থাকে ডাচরা৷ ৮৬ মিনিটে উইঘোর্স্ট বা পায়ের শট জাল ঘেষে বের হয়ে যায়। ম্যাচের শেষ দিকে যেন নাটকের প্লট নতুন করে লেখে নেদারল্যান্ডস।

বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল হতে আর মাত্র ১ মিনিট দূরে আর্জেন্টিনা। এমন সময়ে ডি বক্সের বাইরে থেকে ফ্রি কিক অয়ায় নেদারল্যান্ডস। দারুণ বুদ্ধিদীপ্ত ফ্রি কিক থেকে গোল করব ডাচদের ঐতিহাসিকভাবে ম্যাচে ২-২ গোলে সমতায় ফেরান উইঘোর্স্ট। ম্যাচ গড়ালো অতিরিক্ত সময়ে।

অতিরিক্ত সময়ের ১০৫ মিনিটে মেসির ফ্রি কিক থেকে ডি বক্সের ভেতর বাড়ানো বলে পা লাগাতে ব্যর্থ হন ওটামেন্ডি। ম্যাচের একদম অন্তিম মুহূর্তে এনজো ফার্নান্দেজের দূরপাল্লার শট বার পোস্টে লেগে প্রতিহত হলে হতাশায় মুষড়ে পড়ে আর্জেন্টিনা। ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে।

টাইব্রেকারে ডাচদের প্রথম ২ টি শটই রুখে আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। মেসির প্রথম ৩টা স্পট কিক থেকে গোল করলেও ৪র্থ শটে মিস করেন এনজো ফার্নান্দেজ। একদম শেষ শটে লাউতারো মার্টিনেজ গোল করে আর্জেন্টিনাকে ৪-৩ ব্যবধানের জয় এনে দেন পেনাল্টি থেকে।