চোখের পাতা কেঁপে ওঠার অনুভূতির সঙ্গে সবাই কমবেশি পরিচিত। হঠাৎ করেই চোখের পাতা কেঁপে ওঠাকে অনেকেই চোখ লাফানোও বলেন।

আবার চোখ লাফানোকে অশুভ বা খারাপ লক্ষণ হিসেবেও বিবেচনা করা হয়। যা একেবারেই ভ্রান্ত ধারণা। তাহলে চোখের পাতা কেঁপে ওঠে কেন? এ বিষয়ে চিকিৎসাবিজ্ঞান কী বলছে?

চোখের পেশি বা পাতার খিঁচুনি বা নড়াচড়ার কারণে চোখের পাতা কেঁপে ওঠে। এ ঘটনাটি নিয়ন্ত্রণ করা কারও ক্ষেত্রেই সম্ভব নয়। চিকিৎসকরা একে ব্লেফারোস্পাজম বলেন। এটি মাত্র কয়েক সেকেন্ডের হন্য চোখের পাতায় ঘটে থাকে।

গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিবছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ২০০০ মানুষ এই সমস্যায় গুরুতরভাবে ভোগেন। পুরুষদের তুলনায় নারীদের চোখে এটি বেশি ঘটে।

এটি যদিও কোনো গুরুতর সমস্যা নয়। তবে দৈনন্দিন জীবনে এ সমস্যা বিরক্তির কারণ হতে পারে। আবার কখনো কখনো ব্লেফারোস্পাজম চোখের নানা সমস্যার কারণ হতে পারে।

সাধারণত তিনটি কারণে যেমন- ক্লান্তি, চাপ বা ক্যাফেইন গ্রহণের কারণে চোখের পাতা কেঁপে ওঠার ঘটনা বেশি ঘটে।

গবেষকদের মতে, আপনার জিন ও চারপাশের পরিবেশের কারণেই এ সমস্যাটি হয়। চোখের পাতা কেঁপে ওঠা মুখ ও আপনার চোখের পাতার চারপাশের পেশির সঙ্গে জড়িত।

কী কী কারণে চোখের পাতা কেঁপে ওঠে?

>> ক্লান্তি
>> মানসিক চাপ
>> ক্যাফেইন
>> অ্যালকোহল গ্রহণ
>> ধূমপান
>> চোখের সংবেদনশীলতা ও
>> কিছু ওষুধ, যেগুলো সাইকোসিস ও মৃগী রোগের চিকিৎসা করে।

মস্তিষ্ক বা স্নায়ুতন্ত্রের ব্যাধির কারণেও চোখের পাতা লাফাতে পারে। যেমন-

>> পারকিনসন রোগ
>> মস্তিষ্কের ক্ষত
>> একাধিক স্ক্লেরোসিস
>> পক্ষাঘাত
>> ট্যুরেটের সিন্ড্রোম ও
>> ডাইস্টোনিয়া।

কারও কারও ক্ষেত্রে এ সমস্যা সারাদিন, সপ্তাহ বা মাস ধরে চলতে পারে। এমন ক্ষেত্রে তারা চোখের সংবেদনশীলতায় ভোগেন।

বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিরক্তির কারণ ঘটায় এই সমস্যা। দীর্ঘদিন ধরে ব্লেফারোস্পাজমে ভুগলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন?

>> এক সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হলে
>> আপনার চোখের পাতা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হলে
>> মুখের পেশিতেও কাঁপুনি অনুভব করলে
>> চোখ লালচে, ফোলাভাব বা ময়লা বের হলে কিংবা
>> উপরের চোখের পাতা ঝরে গেলে।