পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের মতো নিন্দনীয় ও অনৈতিক কাজ থেকে বিরত থাকতে শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

তিনি বলেছেন, কোনো শিক্ষক প্রশ্নফাঁস করলে তার দায় গোটা শিক্ষক সমাজের ওপর বর্তায়। পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস বন্ধ হলেও দু-একজন শিক্ষকের মাধ্যমে এমন ঘটনা ঘটছে।

বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, শিক্ষকদের নানা ধরনের দাবি রয়েছে। আমরা তাদের যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নে সচেষ্ট রয়েছি। একজন শিক্ষকের আর্থিক-সামাজিক নিশ্চয়তা না থাকলে শ্রেণিকক্ষে পাঠদানে তিনি মনোযোগী হবেন না। আমাদের নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতাও রয়েছে। সেগুলো মোকাবিলা করে শিক্ষকদের সামাজিক ও আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস বন্ধ করা সম্ভব হলেও বর্তমানে দু-একজন শিক্ষক এ ধরনের নেক্কারজনক কাজে জড়িত হচ্ছেন। একজন শিক্ষক প্রশ্নফাঁস করলে তার দায় গোটা শিক্ষক সমাজের ওপর বর্তায়। কেউ কেউ তাদের শিক্ষার্থীকে আরও ভালো করাতে অনৈতিক কাজে যুক্ত হন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ভালো শিক্ষার্থী মানে পাবলিক পরীক্ষায় বেশি নম্বর পাওয়া নয়, বরং ভালো মানুষ হিসেবে তাকে তৈরি করা। শিক্ষার্থীকে কোনো ধরনের অনৈতিক সুবিধা না দিতে শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

ডা. দীপু মনি বলেন, শিক্ষকরা আমাদের ভাবতে শেখাবেন, অনুপ্রেরণা দেবেন, আলোর দিশারী দেখাবেন। সেসব নিয়ে আমাদের সন্তানেরা আগামী দিনের জন্য প্রস্তুত হবে। যিনি শেখাবেন তার সততা, আদর্শ, দর্শন ও সহমর্মিতা থাকতে হবে। আমাদের নতুন কারিকুলাম সেভাবেই তৈরি করা হয়েছে। এর মাধ্যমে আমাদের শিক্ষার্থীরা পাঠ্যবইয়ের সঙ্গে বাস্তবতার আলোকে নিজেকে গড়ে তুলতে সক্ষম হবে।

কখনো কখনো শিক্ষার্থী চরম আত্মহননের সিদ্ধান্ত নিয়ে জীবনের শেষ পর্যায়ে চলে যাচ্ছে উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, হতাশা থেকে আমাদের কোনো কোনো শিক্ষার্থী আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে। এজন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। পরিবারে কোনো সন্তান হতাশাগ্রস্ত থাকলে তাকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে হবে।

অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, এশিয়া মহাদেশের অনেক দেশের চাইতে আমাদের শিক্ষার্থীরা লিখতে, বলতে ও পড়ায় এগিয়ে। বিশ্ব র্যাংকিংয়ে আমরা এগোতে না পারলেও দক্ষতায় আমাদের শিক্ষার্থীরা এগিয়ে আছেন। শিক্ষকরা নিয়মিত যে প্রশিক্ষণ পাচ্ছেন তা শ্রেণিকক্ষে প্রয়োগ করতে হবে। উচ্চশিক্ষার সঙ্গে শিক্ষার্থীদের কর্মদক্ষ করে তুলতে হবে।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব আবু বকর ছিদ্দিক, রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও দপ্তর সংস্থার প্রধান প্রমুখ।