জিম করতে গিয়ে হার্ট অ্যাটাকর ঘটনা এখন প্রায়ই ঘটছে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে। এবার জিম করতে গিয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন বলিউড অভিনেতা সালমান খানের ‘বডি ডাবল’ সাগর পান্ডে। তার বয়স হয়েছিল ৫০ বছর।
সম্প্রতি জিম করতে গিয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার পর মাসখানেকের মধ্যে মারা যান বলিউডের কমেডিয়ান অভিনেতা রাজু শ্রীবাস্তব। এর আগে জিমে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন বিগ বস তারকা সিদ্ধার্থ শুক্লা। তবে জিম বা ব্য়ায়াম করার সময় কেন হার্ট অ্যাটাক হয়?
এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, একজন ব্যক্তি শারীরিকভাবে ফিট থাকলেও তার হতে পারে সাডেন হার্ট অ্যাটাকা বা সাডেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট। কারও ব্লাড প্রেশার বা কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক থাকলেই যে তার হৃদযন্ত্র সুস্থ তা কিন্তু নয়। জিনগত কারণেও হার্টের বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বাড়ে। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন এই ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেয়।
আমেরিকার লস অ্যাঞ্জেলসের হার্ট ইনস্টিটিউটের সহযোগী পরিচালক সুমিত চৌগের মতে, অনেকেই মাসল তৈরির জন্য জিমে গিয়ে ভারোত্তোলন করেন।
প্রথমদিকেই অতিরিক্ত ওজন তোলা হার্টের উপর চাপ বাড়ায়। তাই প্রথমে কয়েক মাস সাধারণ এক্সারসাইজ করুন। তারপর ধীরে ধীরে ওয়েট লিফটিং করার অভ্যাস গড়ুন। মুম্বাইয়ের য়াকহার্ট হাসপাতালের ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট ডা. কৌশল ছত্রপতি পরামর্শ দেন, আপনি যদি ভারী ব্যায়াম করতে অভ্যস্ত না হন তাহলে কঠোর ব্যায়াম করবেন না। ধীরে ধীরে ব্যায়ামের সময় ও গতি বাড়ান। দিনে ৩-৫ কিলোমিটার দ্রুত হাঁটার মাধ্যমে শুরু করুন। ধীরে ধীরে আপনার স্ট্যামিনা গড়ে তুলুন।
কখনো অতিরিক্ত ব্যায়াম করা উচিত নয়। শরীরচর্চার আগে অবশ্যই ৫-১০ মিনিটের ওয়ার্ম আপ করতে হবে। তারপর ২০-৩০ মিনিটের ব্যায়ামই আপনাকে সুস্থ রাখার জন্য যথেষ্ট। সবশেষে ৫-১০ মিনিট শরীর ঠান্ডা করুন। তবে ব্যায়াম করার সময় যদি বুকের বাম দিকে ব্যথা অনুভব করা হয় কিংবা বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যথা করে তাহলে বিষয়টিকে উপেক্ষা করবেন না। বিশেষ করে যদি পরিবারে কারও হার্ট অ্যাটাক অতীতে হয়, সেক্ষেত্রে আরও সতর্ক থাকা উচিত। ওজন কমানোর জন্য মন দিয়ে ডায়েট, শরীরচর্চা করতে হবে ঠিকই কিন্তু তাই বলে প্রথম থেকেও অতিরিক্ত ওজন তোলা, খুব বেশি ডাম্বেল এক্সারসাইজ করা উচিত নয়। প্রথমে ফ্রি হ্যান্ড, স্ট্রেচিং এসব বেশি করে করুন।
এর পাশাপাশি স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অবহেলা করবেন না। সবারই উচিত ব্লাড প্রেশার, এলডিএল, কোলেস্টেরল, এইচবিএ১সি এর মাত্রা কত তা জানা। আর কেউই বুকের ব্যথাকে অবহেলা করবেন না। এক্ষেত্রে ইসিজি করুন ও কার্ডিওলজির পরামর্শ নিন। প্রাথমিক চিকিৎসায় হার্ট অ্যাটাকেও জীবন বাঁচে।
হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ কী?
বিশেষজ্ঞদের মতে, এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি মানুষ হার্ট অ্যাটাকের অন্তত এক সপ্তাহ আগে থেকে থেকে বিভিন্ন উপসর্গ টের পান, তবে তা সাধারণ ভেবে বেশিরভাগই অবহেলা করেন। যেমন- শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা, অতিরিক্ত ক্লান্তি ইত্যাদি। এসব লক্ষণ দেখলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।