এক সপ্তাহ কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর গত সপ্তাহে আবার দরপতন হয়েছে দেশের শেয়ারবাজারে। সপ্তাহজুড়ে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি কমেছে মূল্যসূচক। একই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।

বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম কমায় এক সপ্তাহে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা কমে গেছে। এর আগের সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধান আড়াই হাজার কোটি টাকা বেড়েছিল।গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ১৯ হাজার ৯১৪ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৫ লাখ ২২ হাজার ৬৬৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা। আগের সপ্তাহে বাজার মূলধন বাড়ে ২ হাজার ৬১৭ কোটি টাকা।

এদিকে, গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নে য়া ৬১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৭৩টির। আর ১৫২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৫১ দশমিক ১১ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৭৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৪৮ দশমিক ৯৯ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ। আর বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক গত সপ্তাহে কমেছে ৩৫ দশমিক ২৭ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৪৯ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ১৯ দশমিক ৩৩ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৮২ শতাংশ।

প্রধান ও ডিএসই-৩০ মূল্যসূচকের পাশাপাশি গত সপ্তাহে কমেছে ইসলামি শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক। গত সপ্তাহে এই সূচকটি কমেছে ১৭ পয়েন্ট বা এক দশমিক ১৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৭ দশমিক ১৭ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ। সবকয়টি সূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৪৬১ কোটি ২৩ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ২ হাজার ২২ কোটি ৭ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ৫৬০ কোটি ৮৪ লাখ টাকা বা ২৭ দশমিক ৭৪ শতাংশ।

গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৭ হাজার ৩০৬ কোটি ১৭ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ১০ হাজার ১১০ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন কমেছে ২ হাজার ৮০৪ কোটি ২২ লাখ টাকা বা ২৭ দশমিক ৭৪ শতাংশ।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ওরিয়ন ফার্মার শেয়ার। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৬৬১ কোটি ২৭ লাখ ২১ হাজার টাকা, যা মোট লেনদেনের ৯ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেক্সিমকোর শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৫৯০ কোটি ৯৮ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। ২৮৩ কোটি ৭৬ লাখ ৩৮ হাজার টাকা লেনাদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইস্টার্ন হাউজিং।

এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, জেএমআই হসপিটাল অ্যান্ড রিকুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং, ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট, বিডিকম অনলাইন, শাইনপুকুর সিরামিক, বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেম এবং সাইফ পাওয়ারটেক।