অশুভ শক্তির বিনাশ ও বিশ্ব মানবের দুর্গতি লাঘবে আবারও ধরায় আবির্ভূত হয়েছেন অসুরবিনাশী দেবী দুর্গা। মহাষষ্ঠীতে ঢাক-ঢোলের বাজনা, কাঁসা-শঙ্খের আওয়াজ ও ভক্তদের উলুধ্বনিতে মাতৃরূপী দেবীর আবাহন হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা।

মহাষষ্ঠীর সন্ধ্যায় দেবীর আমন্ত্রণ ও অধিবাস হবে। শনিবার (০১ অক্টোবর) সকাল থেকেই রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে সব বয়সী মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। পূজার আনন্দে মেতে উঠতে দেখা গেছে শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণীসহ সব বয়সী মানুষকে। শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপনের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। সকালে মন্দিরের মূল ফটকের সামনে নারী-পুরুষের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। মণ্ডপের ঠিক সামনেই সারি সারি চেয়ারে বসা ভক্ত ও দর্শনার্থীরা।

মহাখালী থেকে আসা অরুন কুন্ডু নামের এক ভক্ত বলেন, ঢাকেশ্বরী কেন্দ্রীয় মন্দিরে এলে এমনিতেই ভালো লাগে। এবারের পূজা শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপন হোক, এমনটাই চাই। পান্থপথ থেকে আসা সুদীপ্তা নামের এক ভক্ত বলেন, আজ দুপুরেই বাড়ি যাবো। তার আগে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে মাকে দেখতে আসলাম। এখানে এলে মনে অন্যরকম প্রশান্তি কাজ করে। ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরের প্রধান পুরোহিত মন্দির ধর্মদাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, আজ ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে এবারের দুর্গাপূজা শুরু হয়েছে। এবার দেবী মর্ত্যে আসছেন গজে (হাতিতে) চেপে। গজ বা হাতিতে চড়ে দেবীর আগমনের অর্থ হল শুভ। দেবী গজে চড়ে মর্ত্যে এলে সঙ্গে সুখ-সমৃদ্ধি নিয়ে আসেন। হাতি হচ্ছে জ্ঞান এবং সমৃদ্ধির প্রতীক। দুর্গার ষষ্ঠাদি কল্পারম্ভ এবং ষষ্ঠিবিহিত পূজা হয়েছে। সন্ধ্যায় হবে দেবীর বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাস।

তিনি বলেন, বিজয়া দশমীতে দেবী মর্ত্যলোক ছাড়বেন নৌকায় চড়ে। নৌকায় গমন মানে মনোকামনা পূর্ণ হওয়া বোঝানো হয়। ধরিত্রী হয়ে ওঠে শস্য-শ্যামলা। তবে একই সঙ্গে অতি বর্ষণ বা প্লাবনের আশঙ্কাও থাকে। মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সহ-সভাপতি নির্মল চ্যাটার্জী বলেন, আজ থেকে শুরু হলো দুর্গাপূজা। সারাদেশে এখন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা উদযাপন হচ্ছে। এটা যেন শেষ পর্যন্ত থাকে। এদিকে দুর্গাপূজা ঘিরে মন্দিরের পাশাপাশি সারাদেশের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পূজায় যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে পুলিশের কন্ট্রোল রুমসহ সব জায়গায় থাকবে বিশেষ ফোর্স।