পটুয়াখালীর সাগর মোহনায় ও নদীগুলোতে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে বড় সাইজের ইলিশ। গত তিন মাসে জেলায় ৩১ হাজার টন ইলিশ ধরা পড়ে। প্রচুর ইলিশ পেয়ে খুশি উপকূলীয় এলাকার জেলেরা। তবে রপ্তানি বাড়ায় স্থানীয় বাজারে ইলিশ মাছের সরবরাহ কমে যায়। ফলে দাম এখনো চড়া।
জেলে ও ব্যবসায়ীরা জানান, সরকারের নানামুখী উদ্যোগে বিগত কয়েক বছর থেকেই দেশের সাগর ও নদ-নদীতে ইলিশের উৎপাদন বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে গত তিন মাসে বিগত বছর থেকে প্রায় ১০ হাজার টন বেশি ইলিশ ধরা পড়েছে। পাশাপাশি এ বছর এখন যেসব ইলিশ ধরা পড়ছে তার আকারও অনেকটা বড়। ইলিশের পাশাপাশি অন্য মাছও ধরা পড়ছে।
ইলিশের উৎপাদন বাড়লেও স্থানীয় বাজারগুলোতে ইলিশের পর্যাপ্ত সরবরাহ নেই। আর হাজার টাকার নিচে এখনো বড় সাইজের ইলিশ কেনা যাচ্ছে না। তবে বাজারে মাছের ভালো দাম পাওয়ায় খুশি জেলেরা।
পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলা সংলগ্ন আগুনমুখা নদীতে ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি নৌকাতেই প্রতিবার জাল ফেললে ৮-১০টি করে ইলিশ মিলছে। আর এসব ইলিশের সাইজ ৯০০ গ্রাম থেকে দেড় কেজি পর্যন্ত। এ ছাড়া ইলিশের পাশাপাশি জেলেদের জালে পোয়া, পাঙাশ, বগনিসহ বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছও ধরা পড়ছে।
জেলে সোবাহান মিয়া বলেন, ‘গত দুমাস ভালো মাছ পাই নাই। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে পাইতেছি। এ বছর ইলিশের সাইজও ভালো।’
ইলিশের প্রজনন, বৃদ্ধি এবং নিষিদ্ধ জালের ব্যবহার বন্ধ করতে পারলে আগামীতে ইলিশের উৎপাদন আরও বাড়বে বলে মনে করেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. লোকমান আলী।
তিনি বলেন, গবেষণা অনুযায়ী ইলিশের পেটে এখন পরিপক্ব ডিম থাকার কথা এবং বাস্তবেও তেমনি পাওয়া যাচ্ছে। আগামী ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম। এ সময় ইলিশের প্রজনন নির্বিঘ্ন করতে পারলে দেশে মাছের উৎপাদন আরও বৃদ্ধি পাবে। পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আজহারুল ইসলাম বলেন, গত বছর এ সময় (১লা জুলাই থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর) জেলায় ২২ হাজার টন ইলিশ ধরা পড়ে। এ বছর একই সময়ে ৩১ হাজার ৫০০ টন ইলিশ ধরা পড়ে। এছাড়া সাইজও মোটামুটি ভালো।
ইলিশের দাম বেশি হওয়ার বিষয়ে এ মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, অন্য পণ্যের বাজার মূল্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় ইলিশের দাম খুব একটা বেশি নয়। এতে জেলেরাও লাভবান হচ্ছেন।