মন্দার আশঙ্কায় সপ্তাহজুড়ে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম স্থিতিশীল ছিল। যদিও শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে সামান্য পরিমাণে বেড়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ সময় সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের বেঞ্চমার্ক ব্রেন্টের দাম ২৪ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৯১ দশমিক শূন্য ৮ মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু সপ্তাহজুড়ে এখন পর্যন্ত কমেছে ১ দশমিক ৯ শতাংশ।
অপরদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআিই) দাম ব্যারেলপ্রতি ১০ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৫ দশমিক ২০ ডলারে। কিন্তু সাপ্তাহিক হিসাবে ১ দশমিক ৯ শতাংশ কম।
সিএমসি মার্কেটের বিশ্লেষক লিওন লি বলেছেন, ‘তেলের দাম সকালে বেড়ে যাওয়ার কারণকে একটি স্বল্পমেয়াদী সংশোধন হিসাবে বর্ণনা করা যেতে পারে’। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেমের নির্দেশে আগামী সপ্তাহে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর সুদের হার বাড়বে। তিনি আরও বলেন, ‘যদিও দাম বৃদ্ধির সম্ভাবনা তুলনামূলকভাবে কম, তবে এটি বাজারের সেন্টিমেন্টে অনিশ্চয়তা নিয়ে আসবে। ফলে পরের সপ্তাহে তেলের দাম কমার ঝুঁকি এখনো রয়েছে’।
উভয় মানদণ্ডই টানা তৃতীয় সপ্তাহ হিসেবে ক্ষতির দিকে যাচ্ছে। মার্কিন ডলারের বেচাকেনা আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। অন্যান্য মুদ্রা ব্যবহার করে তেল কেনা ক্রেতাদের জন্য আরও ব্যয়বহুল হয়ে যাচ্ছে। শুক্রবার ডলারের সূচক কমেছে। যুক্তরাষ্ট্রে মুদ্রাস্ফীতি প্রসারিত হচ্ছে এবং বিশ্বব্যাপী মন্দার ক্রমবর্ধমান উদ্বেগ রয়েছে। ফলে বিনিয়োগকারীরা পরের সপ্তাহেও যুক্তরাষ্ট্রে দর বৃদ্ধির জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম এখনো ডলারের ওপর নির্ভর। যদিও রাশিয়া ইউক্রেন আগ্রাসনের পর রুবলে তেল বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে আন্তর্জাতিক তেলের বাজারে এক ধরনের অস্থিরতা চলছে গত ছয় মাস ধরে।
ইরান পরমাণু চুক্তি পুনবর্হাল সত্যিই চায় কি না সে বিষয়ে তাদের ‘গুরুতর সন্দেহ’ রয়েছে ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও জার্মানির। এই চুক্তি না হওয়ার অর্থ, আন্তর্জাতিক বাজারে ইরানের তেলের প্রবেশ আপাতত বন্ধই থাকছে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর থেকেই বিশ্ববাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ে জ্বালানি তেলের দাম। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করে। এরপর তেলের দাম ৪০ শতাংশ বেড়ে ১৪ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ হয়। রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা করলে জ্বালানি তেলের বাজার অস্থির হয়ে উঠবে বলে আগেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা।