আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের অভিযাত্রা নিরবচ্ছিন্ন করার ক্ষেত্রে প্রধান প্রতিবন্ধক হচ্ছে বিএনপি। এটিই আজ গণতন্ত্র দিবসের বাস্তবতা।
তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা বিএনপিই বাধাগ্রস্ত করছে, গণতান্ত্রিক রীতিনীতি ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার ক্ষেত্রে তারাই প্রধান অন্তরায়। যারা অস্ত্র উঁচিয়ে ক্ষমতা দখল করেছিল এবং ক্ষমতাকে নিষ্কণ্টক করার জন্য হাজারো মানুষ হত্যা করেছিল সে বিএনপি আজ গণতন্ত্রের কথা বলে বিশ্ব গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দেয়, যা হাস্যকর।
আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলে তথ্য ভবন মিলনায়তনে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ আয়োজিত জনতার সরকার ইন্টারেক্টিভ ওয়েবপোর্টাল janatarsarkar.gov.bd উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সভাপতিত্বে সংসদ সদস্য নাহিদ ইজাহার খান, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক রঞ্জিত কুমার এবং জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টি বক্তব্য দেন।
এসময় তথ্যমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠেনের লক্ষ্যে জীবন দিয়ে এ দেশ রচনা করে গেছেন। কিন্তু আমাদের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা তখনই হোঁচট খায়, যখন ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। এরপরই জিয়াউর রহমান প্রথমে খন্দকার মোশতাক আহমেদকে হটিয়ে এবং পরে অস্ত্র ঠেকিয়ে বিচারপতি সায়েমের সই নিয়ে রাষ্ট্রপতি বনে যান। এরপর জিয়াউর রহমান রাজনীতির কাকদের সমন্বয় ঘটিয়ে বিএনপি নামের একটি দল গঠন করেন।
খালেদা জিয়াও কম যাননি উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, কোটালীপাড়ায় ৭৬ কেজি বোমা হামলা, ২০০৪ সালে ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ের সামনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে গ্রেনেড হামলা পরিচালনা করা হয়। এতে ২৪ জন নিহত ও পাঁচ শতাধিক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী আহত হয়েছিল। অন্য আহতদের মতো আমার শরীরে এখনো বহু স্প্রিন্টার আছে। ২০১৩-১৪-১৫ সালে সরকার পতনের লক্ষ্যে মানুষকে দিনের পর দিন অবরোধের নামে ঘরের মধ্যে অবরুদ্ধ করে রেখেছিল। সেসময় পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করে শতশত মানুষকে হত্যা করা হয়েছে এবং হাজারো মানুষকে আগুনে ঝলসে দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, বিএনপির দলীয় ঐক্যজোটের মধ্যে তালেবানরাও আছে। যে আফগানিস্তানে মতপ্রকাশের কারণে শিরচ্ছেদ করা হয় সে ভাবধারার রাজনীতির দলগুলো এবং যারা এ দেশ চায়নি সে জামায়াতকে সঙ্গে রেখেছে বিএনপি। সুতরাং তারাই হচ্ছে আজকের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার প্রধান অন্তরায়।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, জনতার সরকার সিটিজেন ইনটারেক্টিভ ওয়েব পোর্টাল দেশের সাধারণ জনগণ ও সরকারের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করবে।
ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গণমুখী দৃষ্টিভঙ্গি বাস্তবায়নে গণতান্ত্রিক চর্চাকে বিকশিত করে উন্নত গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে এটি তৈরি করা হয়েছে উল্লেখ করে পলক বলেন, এর মাধ্যমে জনগণ গঠনমূলক সমালোচনা বা পরামর্শ কিংবা সুপারিশ করতে পারবে। সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়া জানাবে যা আপতত প্রতি সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রীবর্গ ও সচিবদের কাছে পাঠানো হবে। এরই মধ্যেই সরকারের ১১টি মন্ত্রণালয় এ পোর্টালে যুক্ত হয়েছে। পর্যায়ক্রমে ৫৬টি মন্ত্রণালয়কে যুক্ত করে এ প্রতিবেদনটি প্রতিদিন একবার সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
জনতার সরকার পোর্টালটি বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের অধীন ডিজিটাল লিটারেসি সেন্টারের আওতায় পরিচালিত হবে। জনতার সরকার পোর্টাল ও সরকারের ই-মেইল সেবার প্রকল্প পরিচালক সাইফুল ইসলাম, এটুআই ও ইউএনডিপি প্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে যোগ দেন।