ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছের প্রজনন ও উৎপাদন বাড়াতে দীর্ঘ ৬৫ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে। আনন্দ ও উৎসাহ নিয়ে দল বেঁধে একে একে সাগরে মাছ শিকারে যাচ্ছেন ভোলার জেলেরা। প্রচুর পরিমাণ ইলিশ ধরে তীরে ফেরার স্বপ্ন দেখছেন তারা।

রোববার (২৪ জুলাই) সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ভোলার দৌলতখান উপজেলার চৌকি, ভবানীপুরসহ বিভিন্ন মৎস্য ঘাটের জেলেরা ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে সকাল থেকে ট্রলারে জালসহ মাছ শিকারের সরঞ্জাম তুলছেন। আবার কোনো কোনো জেলে সাগরে মাছ শিকারে যাওয়ার জন্য ২০-২৫ দিনের চাল, ডালসহ বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রীও তুলছেন।

জেলে মো. আমির মাঝি ও নজরুল মাঝি বলেন, সরকারি নিষেধাজ্ঞা মেনে আমরা সাগর থেকে ট্রলার নিয়ে তীরে ফিরে এসেছি। ৬৫ দিন আমরা অলস সময় কাটিয়েছি। আয় রোজগার না থাকায় অনেকটা কষ্টে দিন কাটিয়েছি। এখন নিষেধাজ্ঞা শেষে দুপুরে আবারও সাগরে মাছ শিকারে যাচ্ছি। এজন্য ২০ দিনের চাল, ডাল, কাঁচাবাজারসহ বিভিন্ন খাবার ও ওষুধ সামগ্রী নিয়েছি। আশা করছি এবার সাগরে গিয়ে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশসহ বিভিন্ন ধরনের সামুদ্রিক মাছ শিকার করতে পারবো। ৬৫ দিনের ধারদেনা ও অভাব দূর হয়ে যাবে।

জেলে হোসেন মাঝি ও আকবর মাঝি বলেন, নিষেধাজ্ঞার ৬৫ দিনে আমরা ব্যাংক ও এনজিওর কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে পারিনি। আজ সাগরে মাছ শিকারের জন্য যাবো। ১০ দিন পর ফিরে এসে সব দেনা পরিশোধ করবো।

ভোলা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্যাহ বলেন, ইলিশসহ প্রায় ৫০০ প্রজাতির সামুদ্রিক মাছের প্রজনন ও উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই রাত ১২টা পর্যন্ত সাগরে নিষেধাজ্ঞা ছিল। এবার নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেরা উৎসাহ নিয়ে সাগরে মাছ শিকারের জন্য যাচ্ছে। আশা করছি জেলেরা সাগরে গিয়ে কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ মাছ শিকার করে বিগত দিনের লোকসান পুষিয়ে উঠতে পারবে। তিনি আরও বলেন, ভোলার সাত উপজেলায় শুধু সাগরে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন এমন প্রায় ৬৪ হাজার জেলের সরকারিভাবে নিবন্ধন রয়েছে। নিষেধাজ্ঞার সময় সরকারিভাবে ৮৬ কেজি করে ওই জেলেদের চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়।