শরীরের জন্য ভাত-মাছ যেমন উপকারী, ঠিক তেমনই দুধও। তবে ভাত-মাছ খাওয়ার পরপরই দুধ পান করা শরীরের জন্য ভালো নাকি খারাপ এ নিয়ে নানা মতবাদ আছে। বিজ্ঞান ও আয়ুর্বেদ অবশ্য জানাচ্ছে বিভিন্ন খাবারের সংমিশ্রণ একসঙ্গে করা উচিত নয়।

যেমন- উচ্চ প্রোটিনযুক্ত স্টার্চি খাবার, দুটি উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার, এমনকি দুধ ও কমলার রস। এ জাতীয় সংমিশ্রণ থেকে হজম সংক্রান্ত সমস্যা এমনকি পাচনতন্ত্রের নানা সমস্যার কারণ হতে পারে।

মাছ খাওয়ার পর কি দুধ পান করা যায়?

মানবদেহের দৃষ্টিকোণ থেকে খাদ্য গ্রহণ ও হজমের ক্ষমতা বোঝা গুরুত্বপূর্ণ। বিজ্ঞানের যুক্তি অনুসারে, মাছ ও দুধের সংমিশ্রণ হলে কোনো সমস্যা নেই। বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় খাবারের রেসিপিতে মাছ, দই বা দুধ একসঙ্গে ব্যবহার করা হয়।

পুষ্টিবিদদের মতে, মাছ ও দুধ দুটো খাবারই হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এমনকি মানসিক স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন রোগব্যাধির সঙ্গে লড়াই করার জন্য দুর্দান্ত।

আয়ুর্বেদ কি বলে?

প্রাচীন আয়ুর্বেদিক গ্রন্থ এবং অনুশীলনগুলো পরামর্শ দেয় যে, মাছ ও দুগ্ধ একসঙ্গে গ্রহণ করা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। এর ব্যাখ্যা হিসেবে ভারতীয় আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞ ডা. বি এন সিনহা জানান, দুধ একটি নিরামিষ খাবার ও মাছ হলো আমিষ খাবার।

এই দুটিকে একত্রিত করলে শরীরে ‘তমস গুণ (ক্ষতিকারক শক্তি)’ বেড়ে যায়। ফলে শরীরের শক্তি প্রবাহে ভারসাম্যহীনতা হতে পারে। এর থেকে লিউকোডার্মা হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। আয়ুর্বেদ আরও পরামর্শ দেয়, দুধ শরীরকে শীতল করে আর মাছ শরীরকে করে উত্তপ্ত। মাছ ও দুধ একসঙ্গে খেলে শরীরে গুরুতর অ্যালার্জিও হতে পারে।

ডা. সিনহার সঙ্গে একমত ওয়েস্টার্ন মেডিসিনও। ইন্দ্রপ্রস্থ অ্যাপোলো হাসপাতালের চিকিৎসক টু এফআইটি ডা. তরুণ সাহনি জানান, মাছ ও দুধ উভয়ই প্রোটিনসমৃদ্ধ, ফলে এর কোনো একটিতে কারও অ্যালার্জি থাকে তা গুরুতরভাবে দেখা দিতে পারে। এছাড়া পেট খারাপ ও ডায়রিয়া হতে পারে।

তবে বিজ্ঞান দ্ব্যর্থহীনভাবে জানাচ্ছে, মাছ ও দুধ একসেঙ্গে খেলে শরীরে কোনো অসুখ হতে পারে এমন কোনো প্রমাণ নেই। বিজ্ঞানী ও ডাক্তাররা এই তত্ত্ব নিয়ে বিতর্ক করেন যে মাছ ও দুধ একসঙ্গে খেলে ভিটিলিগো বা লিউকোডার্মা হতে পারে।

ভিটিলিগো হলো শরীরের একটি অবস্থা যা ভাইরাল অবস্থা, জেনেটিক অক্সিডেটিভ স্ট্রেস বা অটোইমিউন ডিসঅর্ডারের কারণে ত্বকের মেলানোসাইট মারা যায়। তবে বিজ্ঞান মাছ ও দুধের সংমিশ্রণের জন্য এই রোগ হওয়ার প্রমাণ পায়নি।