লাগামহীনভাবে বেড়েই চলেছে মূল্যস্ফীতির হার। সয়াবিন তেলের দাম ছাড়িয়েছে আকাশচুম্বী। এর প্রভাবে জুন মাসে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে হয়েছে ৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ, যা গত মে মাসে ছিল ৮ দশমিক ৩০ শতাংশ। সাধারণ মূল্যস্ফীতির হারও মে মাস থেকে বেড়েছে জুন মাসে। জুন মাসে সাধারণ মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে হয়েছে ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ, গত মে মাসে যা ছিল ৭ দশমিক ৪২ শতাংশ।
মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) দেওয়া মে মাসের ভোক্তা মূল্যসূচকের (সিপিআই) হালনাগাদ তথ্যে এমনটা বলা হয়েছে।
বিবিএস জানায়, খাদ্যবহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে ৬ দশমিক ৩৩ শতাংশ হয়েছে, গত মাসে যা ছিল ৬ দশমিক ০৮ শতাংশ। অর্থাৎ মে মাসের তুলনায় জুন মাসে সব খাতেই মূল্যস্ফীতির হার ঊর্ধ্বমুখী।
বাজারে লাগামছাড়া নিত্যপণ্যের দাম। তবুও ক্রেতাদের কিছুটা স্বস্তি দিতে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতির হার ৫ দশমিক ৬ শতাংশের মধ্যে বেঁধে রাখার প্রত্যাশা করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। অথচ বাজেট ঘোষণার পরই রেকর্ড হারে বেড়েছে খাদ্যপণ্যের দাম।
সরকারি সংস্থা বিবিএসের তথ্যে দেখা যায়, পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে গত মে মাসে দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৭ দশমিক ৪২ শতাংশ।
এর অর্থ হলো, ২০২১ সালের মে মাসে যে পণ্য বা সেবার জন্য ১০০ টাকা খরচ করতে হতো, ২০২২ সালের মে মাসে একই পণ্য বা সেবার জন্য ১০৭ টাকা ৪২ পয়সা খরচ করতে হয়েছে। এ মাসে খাদ্যের মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮ দশমিক ৩০ শতাংশ। এর অর্থ হলো, ২০২১ সালের মে মাসে যে খাদ্যপণ্য বা খাবারের জন্য ১০০ টাকা খরচ করতে হতো, চলতি বছরের মে মাসে একই খাবারের জন্য ১০৮ টাকা ৩০ পয়সা খরচ করতে হয়েছে।
বিবিএসের মূল্যস্ফীতির হার পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, জুন মাসে খাদ্যবহির্ভূত ও খাদ্যে মূল্যস্ফীতির হার বেড়েছে। প্রসাধন সামগ্রী, জুতা, পরিধেয় বস্ত্র, বাড়িভাড়া, আসবাবপত্র, গৃহস্থালি পণ্য, চিকিৎসাসেবা, পরিবহন, শিক্ষা উপকরণ এবং বিবিধ সেবা খাতের মূল্যস্ফীতির হার বেড়েছে। এছাড়া জুলাই মাসে খাদ্য খাতে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে।
হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, চাল, ডাল, মাছ, মাংস, ব্রয়লার মুরগি, শাক-সবজি, ফল, মসলা, দুগ্ধজাতীয় ও অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী কিনতে বিপাকে পড়ছেন ক্রেতারা।
অর্থাৎ শহরের চেয়ে গ্রাম এলাকায় পণ্যমূল্য ও অন্যান্য সেবার দাম বেড়েছে বেশি। জুন মাসে গ্রামে সাধারণ মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে হয়েছে ৮ দশমিক ৯ শতাংশ, যেখানে শহরে মূল্যস্ফীতির হার ৬ দশমিক ৬২ শতাংশ। ফলে শহরের থেকে গ্রামের মানুষ আরও ভুগছে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার কারণে।